চীনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র
চীনে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের কঠোর বৈদেশিক নীতির প্রভাব যতটা পড়েছে, তা আর কোথাও পড়েনি। কিন্তু বেইজিংয়ের ক্ষমতা যেমন বেড়েছে, তেমনি ওয়াশিংটনের অস্বস্তিও বেড়েছে। আর এখন বছরের পর বছর পাল্টাপাল্টি অবস্থানের পর যুক্তরাষ্ট্র আবার এই অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। খবর বিবিসির।প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কম্বোডিয়ায় অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। ২০১৭ সালের পর থেকে এমন সফরে আসা তিনিই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত বছরও তিনি ভার্চুয়ালি সেখানে যোগ দিয়েছিলেন।
তারপর তিনি ইন্দোনেশিয়ায় যাবেন। এই দেশটি এই অঞ্চলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে তিনি জি-২০ বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে চীনা নেতা শি জিন পিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে কথা রয়েছে। কিন্তু এখন অতীতের চেয়ে আরও বেশি প্রতিকূল কূটনৈতিক পরিবেশে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এক সময় এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কূটনীতির জন্য অপরিহার্য বলে বিবেচিত ছিল আসিয়ান। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে কার্যকর থাকতে এটি হিমশিম খাচ্ছে। সংস্থাটি নিজেকে শান্তি ও নিরপেক্ষতার একটি অঞ্চল হিসাবে গড়ে তুলেছে।
আসিয়ানের ১০টি সদস্য রাষ্ট্র রয়েছে যারা ঐকমত্য চায়, একে অপরের সমালোচনা এড়ায় এবং বিভিন্ন শক্তিকে জড়িত করতে দ্বিধা করে না। সংস্থাটির ছোট, দুর্বল সচিবালয় এবং সদস্যদের উপর সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য প্রক্রিয়ার অভাব এই মানসিকতার প্রতিফলন করে।
সংস্থাটি সবচেয়ে ভাল কাজ করেছিল যখন সেটি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক ঐকমত্য ছিল এবং সেটি বাণিজ্য ও প্রবৃদ্ধিকে বাড়িয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববাজারে চীনের আগমন এবং ২০০০ সালের গোড়ার দিকে চীনের প্রভাব যখন বাড়তে শুরু করে, তখন একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ কমতে থাকে। কারণ তখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
এই অঞ্চলে চীন দেশটির সাবেক নেতা দেং জিয়াও পিংয়ের একটি মন্ত্র মাথায় নিয়ে আগানো শুরু করে। আর তা হচ্ছে, ‘নিজের শক্তি লুকাও, নিজের সময় কাটাও’। কিন্তু টানা ১০ বছর ধরে শি ক্ষমতায় থাকার কারণে চীনের শক্তি আর লুকানো যায়নি।
গত দশকে দক্ষিণ চীন সাগরে রীফ দ্বীপপুঞ্জে চীনের দখলদারিত্ব এবং সামরিক উন্নয়ন এই অঞ্চলে অন্যান্য দাবিদার বিশেষ করে ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের সঙ্গে চীনকে সরাসরি সংঘর্ষে নিয়ে এসেছে।
চীন অর্থনৈতিকভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ এবং সামরিকভাবে এত শক্তিশালী যে কেউই প্রকাশ্যে এর মোকাবিলা করার সাহস করে না। লাওস ও কম্বোডিয়ার মতো ছোট রাষ্ট্রগুলোকে বেছে নিয়ে চীন কার্যকরভাবে আসিয়ান ঐক্যকে ধ্বংস করেছে। এই দেশগুলো এখন বেইজিংয়ের মহানুভবতার উপর নির্ভরশীল ও তারা মূলত গ্রাহক দেশ।