চুয়াডাঙ্গায় ক্লিনিকে সেবিকাকে গলা কেটে হত্যা \ ঘাতক স্বামী গ্রেফতার \ রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার

Share Now..

\ চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি \
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে হাফিজা খাতুন নামে (৩৫) এক সেবিকাকে গলা কেটে হত্যা করা খুনি (ঘাতক) তার দ্বিতীয় স্বামী কবির হোসেনকে পুলিশ রাতেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে এবং হত্যা কাজে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে।
গত শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার সময় জীবননগর পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কে মা ক্লিনিক এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
নিহত হাফিজা খাতুন জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের হালসানা পাড়ার শমসের আলীর মেয়ে এবং একই উপজেলার বালিহুদা গ্রামের টাইলস মিস্ত্রি কবির হোসেনের স্ত্রী।
নিহত হাফিজা খাতুন ওই ক্লিনিকে দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ সেবিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এদিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই ঘাতক স্বামী কবির হোসেনকে জীবননগর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। এ সময় পুলিশ কবির হোসেনের কাছ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা ধারালো একটি ছুরি উদ্ধার করেছে।
হত্যার খবর পেয়ে রাতেই চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দিন, সহকারী পুলিশ সুপার জাকিয়া সুলতানাসহ (দামুড়হুদা সার্কেল) পুলিশের কর্তা ব্যক্তিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী জাকির আহম্মেদ শামীম জানান, আমি একটা বিশেষ কাজে ১০ দিন যাবৎ ঢাকায় অবস্থান করছি। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ক্লিনিকের সেবিকা বিউটি খাতুন আমাকে ফোন করে জানায়, রাত ৮ টার দিকে ক্লিনিকের রিসিপসনের সামনে হঠাৎ গোঙানির শব্দ শুনতে পাই। দ্রæত সেখানে গিয়ে হাফিজা খাতুনের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করি। এ সময় অন্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।
বিউটি খাতুন শামীমকে আরও জানিয়েছেন, গত শনিবার সকালে হাফিজার দ্বিতীয় স্বামী কবির হোসেনের সাথে তার ঝগড়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তার স্বামী কবির হোসেন তাকে গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে গেছেন।
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাগবির হাসান জানান, হাসপাতালে আনার আগেই হাফিজা খাতুনের মৃত্যু হয়। তার গলায় এবং হাতে ধারলো অস্ত্রের একাধিক চিহ্ন পাওয়া গেছে।
সন্তোষপুর গ্রামবাসী জানায়, সন্তোষপুর গ্রামের হালসানা পাড়ার শমসের আলীর মেয়ে হাফিজা খাতুনের প্রথম বিয়ে হয় মহেশপুর উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামে। প্রথম পক্ষের একটি মেয়ে এবং একটি ছেলে সন্তান রয়েছে হাফিজার। মেয়েটার বিয়ে হলেও ছেলেটা নবম শ্রেণিতে পড়া-লেখা করে। প্রথম পক্ষের স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়।
পরে হাফিজা খাতুন দেড় বছর আগে জীবননগর উপজেলার বালিহুদা গ্রামের টাইলস মিস্ত্রী কবির হোসেনের সাথে ভালোবাসা বিয়ে করেন।
নিহত হাফিজা খাতুনের পিতা শমসের আলী জানান, আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, জীবননগরের একটি ক্লিনিতে হাফিজা খাতুন নামে এক গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের পর পুলিশ দ্রæত অভিযান চালিয়ে আড়াই ঘন্টার মধ্যে ঘাতককে হত্যাকাজে ব্যবহৃত ছুরিসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। ঘাতক নিহত হাফিজার ২য় স্বামী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। হাফিজার মরদেহ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *