চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়া রোগীর মৃত্যু: আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ১৭৫ রোগী ভর্তি

Share Now..

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মারাগেছে এক নারী। গত ৭ দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশুসহ ১৭৫ জন ভর্তি হয়েছেন। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৮০-১০০ ডায়রিয়া রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

একই সময় হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রাবেয়া খাতুন নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৫ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই নারীর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে। পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে দুপুরের দিকে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হন ওই নারী।

তবে চিকিৎসক বলছেন, হার্ট ও ডায়াবেটিক গুরুতর অবস্থা ধারণ করায় ডায়রিয়া ওয়ার্ড থেকে রাবেয়া খাতুনকে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে রেফার করা হয়। এর ২ মিনিট পরই তার মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হন রাবেয়া খাতুন। রাত ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে চিকিৎসক এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত রাবেয়া খাতুনের ছেলে কানন বলেন, শনিবার সকালে আমার মা পাতলা পায়খানা ও বমি করেন। কয়েকবার পাতলা পায়খানা করলে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের নিকট নেয়া হলে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। দুপুর ১টার দিকে সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করি। এরপর থেকে আমার মা কিছুটা সুস্থবোধ করছিলেন। রাত ১১টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে সময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আমার মা মারা গেছে বলে জানান। রাবেয়া খাতুনকে অন্য ওয়ার্ডে রেফার্ড করা হয়েছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মাকে চিকিৎসক রেফার করেনি। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে অসুস্থ হয়ে পড়লে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এসে মৃত ঘোষণা করেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. লিওন বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল (শনিবার ৫ নভেম্বর) দুপুরে রাবেয়া খাতুন ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। হার্ট ও ডায়বেটিক গুরুতর অবস্থায় ধারণ করায় রাত ১০ টা ৫৮ মিনিটের দিকে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে রেফার করি। এর ২ মিনিট পরই রাবেয়া খাতুনের মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন সাজ্জাৎ হোসেন জানান, এ বিষয়ে তিনার কাছে কোন তথ্য নেই, তবে তিনি পরামর্শ দেন হাসপাতালের সুপারেটেন্ডের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। হাসপাতালের সুপারেটেন্ডের ফোন ধরছে না (রিসিভ) বলে জানালে সিভিল সার্জনও বলেন হাসপাতালের সুপারেটেন্ডের তার ফোনও ধরছে না।

এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, দুটি কক্ষ নিয়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে কোনো শয্যা খালি নেই। ফলে মেঝেতেই শিশুসহ রোগীদের থাকতে হচ্ছে। জায়গা না থাকায় বাইরের বারান্দার মেঝেতে রোগীদের চিকিৎসা চলছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয় গ্রহণ এবং অনিরাপদ পানির কারণে ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে। সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্সরা জানান, এই কয়েক দিনে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই বয়স্ক। শিশু রোগী কম আছে। এই মুহুর্তে খুব বেশি একটা চাপ নেই। তবে অবস্থার উন্নতি না হলে পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হবে আমাদের।

One thought on “চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়া রোগীর মৃত্যু: আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ১৭৫ রোগী ভর্তি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *