চুয়াডাঙ্গায় তালাকের প্রতিশোধ নিতেই শ্বশুরের ফার্নিচারের দোকানে আগুন; ৬ দোকান পুড়ে কোটি টাকার ক্ষতি
\ চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি \
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে স্ত্রীর কাছ থেকে তালাকনামা পেয়ে ক্ষুব্ধ জামাতা গভীর রাতে আগুন লাগিয়ে দিল শ্বশুরের ফার্নিচারের দোকানে। এ ঘটনায় ওই এলাকার ছয়টি ফার্নিচারের দোকান পুড়ে ভস্মীভূত হয়। সিসি টিভির ফুটেজ দেখে শনাক্তের পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত সোনা মিয়া (২৫) ও শামীম হোসেন (২৯) নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- জীবননগর উপজেলার একতারপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে সোনা মিয়া ও জীবননগর পৌর শহরের বসতিপাড়ার খেজমত আলীর ছেলে শামীম হোসেন। তারা প্রতিশোধ নিতেই পরিকল্পিতভাবে মঙ্গলবার দিনগত রাত ১ টার সময় জীবননগর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কাঠপট্টিতে ফার্নিচারের দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে আগুনে ছয় ব্যবসায়ীর ৬টি দোকানে কোটি টাকার ফার্নিচার ও কাঠ পুড়ে ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে জেলা পুলিশ প্রেসবিফিংয়ের মাধ্যমে ঘটনাটি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। পুলিশ ও কাঠব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, ফার্ণিচার ব্যাবসায়ি জীবননগর পৌর শহরের বসতি পাড়ার খোরশেদ আলমের মেয়ের খুশি খাতুনের সঙ্গে চার বছর আগে একই উপজেলার একতারপুর গ্রামের সোনা মিয়ার বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের কারণে খুশি খাতুন দু’দিন আগে স্বামী সোনা মিয়াকে তালাক দিয়ে পিতার বাড়িতে চলে যান। এতে ক্ষুব্ধ হয় সোনা মিয়া। প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে সে। পরিকল্পনা অনুযায়ি মঙ্গলবার (১৪ মে) দিনগত রাত ১টার দিকে বন্ধু, শামীম হোসেনকে সাথে নিয়ে জীবননগর উপজেলা শহরের কাঠপট্টিতে সাবেক শ্বশুর খোরশেদ আলমের ফার্নিচারের দোকানে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় সোনা মিয়া। আগুন ছড়িয়ে যায় পুরো এলাকায়। দমকল বাহিনীর তিনটি ইউনিট (জীবননগর, দামুড়হুদা ও ঝিনাইদহের মহেশপুর) তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ছয় ব্যবসায়ীর ফার্নিচারের দোকান পুড়ে ভস্মীভূত হয়। এতে ফার্নিচার ও কাঠসহ এক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করে। পরে কাঠব্যবসায়ী মো. শহিদ জীবননগর থানায় মামলা করেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশ মূল আসামি সোনা মিয়া ও সহযোগী শামীমকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেসবিফিং করে সাংবাদিকদেরকে এসব তথ্য জানায় পুলিশ। প্রেসবিফিং-এ পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত আসামি সোনা মিয়া ও শামীম হোসেন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তারা জীবননগরের কাঠপট্টিতে গভীর রাতে আগুন দেয়।