চুয়াডাঙ্গায় ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলো ২৮ তরুণ-তরুণী

Share Now..

\ চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি \
চুয়াডাঙ্গায় শতভাগ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশের চাকরি পেলেন ২৮ তরুণ-তরুণী। এ চাকরি পেতে অনলাইনে জনপ্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ১২০ টাকা। কোনোরকম তদবির বা অর্থ লেনদেন ছাড়াই বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মাত্র ১২০ টাকায় চাকরি পেয়ে অনেকেই আবেগাপ্লæত হয়েছেন। অভিভাবকরাও স্বপ্নের মতো দেখছেন বিষয়টি। রবিবার (২৪ মার্চ) এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, শনিবার (২৩ মার্চ) রাত ৯টার দিকে পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান (পিপিএম-সেবা)। সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ২৪ পুরুষ ও ৪ নারী প্রার্থী নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। এ সময় নির্বাচিতদের নাম ঘোষণার সময় জেলা পুলিশ লাইন মাঠে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাদের সবাই। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে দেশের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন তারা। ফলাফল ঘোষণার পর তাদেরকে পুলিশ সদস্য হিসেবে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছে জেলা পুলিশের সদস্যরা। সাধারণ কোটায় (মেধাতালিকায় পর্যায়ক্রমে) আহসান হাবিব জিসান, ইমরান হোসাইন, রুবায়েত হোসাইন, আসিফ ইকবাল, রাকিবুল ইসলাম, সজিব, রিফাত আলী, আতিক হাসান, আকরাম হোসাইন, জাহিদুল ইসলাম, আরাফাত হোসাইন, মাহাবুদুর রহমান, মেজবাউর রহমান, আশিক আলি, জিহাদ, পারভেজ হোসাইন হিরো। এছাড়া অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন লিমন আলি, ভূপেন শিল, তাওফিক উমর, আকাশ হোসাইন, সাদ্দাম হোসাইন। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় (পুরুষ) চাকরি পেলেন আব্দুল হামিম, আশরাফ আলি থানাবি, রাকিব হোসাইন, শাকিল আলি ও গোলাম সাকলাইন সৌরভ। পুলিশ পোষ্য কোটায় (পুরুষ) যারা চাকরি পেলেন, মোস্তাফিজুর রহমান শাকিব ও সোহানুর রহমান। আনসার ও ভিডিপি কোটায় (পুরুষ) পেয়েছেন, নাজিমুস সাকিব। নারী সাধারণ কোটায় চাকরি পেলেন, খালেদা আক্তার হাসি, সুরাইয়া আক্তার তিশা, কনিকা খাতুন ও জান্নাতুল মিম। এছাড়া অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন, সুরাইয়া আক্তার ও ইতি খাতুন। মেধাতালিকায় পুরুষের মধ্যে প্রথম হওয়া আহসান হাবিব জিসান বলেন, অনেককে বলতে শুনেছি সরকারি চাকরির জন্য অনেক টাকা পয়সা লাগে। ভালো লেখাপড়া করলে যে চাকরি পাওয়া যায় তার প্রমাণ পেলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে অনেক স্বচ্ছভাবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এভাবে চললে মেধাবীরা সরকারি চাকরিতে আসতে পারবে। অনলাইনে ১২০ টাকা ফি দিয়ে আবেদন করেছিলাম। এ ছাড়া কোনো টাকা লাগেনি। কাউকে দিয়ে সুপারিশও করাতে হয়নি। গত ২০ ফেব্রæয়ারি ১ম ধাপে চাকরি প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই, শারীরিক মাপ, শারীরিক সক্ষমতা ও আনুষঙ্গিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৩০১ জন প্রার্থীকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষার জন্য মনোনীত করেন। গত ১৬ মার্চ চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজে বাছাইকৃত ৩০১জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। যার মধ্য থেকে পরে ৬৫ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। উত্তীর্ণ প্রার্থীরা মনস্তাত্তি¡ক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে হতে মেধা,যোগ্যতার ভিত্তিতে ২৪ জন ছেলে এবং ৪ জন মেয়েসহ মোট ২৮জন প্রার্থী নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান (পিপিএম-সেবা) বলেন, আমরা খুবই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি নিয়োগ প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করার জন্য। শেষ পর্যন্ত শতভাগ ন্যায়, নীতি ও নিষ্ঠার সঙ্গে এ প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করেছি। কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়নি, এটা আমি দৃঢ়চিত্তে বলতে পারি। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত সকলের একমাত্র পূর্ব শর্ত ছিল মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে। তাদের অন্য কোনো পরিচয়, সামাজিক বা অর্থনৈতিক অবস্থান ভূমিকা পালন করেনি। সরকার কতৃর্ক নির্ধারিত ১২০ টাকা তাদের সরকারি খরচ ছিল। জেলা পুলিশ সব বিষয়ে খুবই তৎপর ছিল। ফলাফল ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ); জনাব মোঃ নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, পিপিএম- সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্); জনাব মোঃ কামরুল আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ), মেহেরপুর ও জনাব দেবাশীষ কর্মকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), মাগুরাসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *