চুয়াডাঙ্গার দীননাথপুরে জিহাদ পেলেন নতুন পাখিভ্যান \ খুশিতে কাঁদলেন জিহাদের পরিবার

Share Now..

\ হিজলগাড়ী প্রতিনিধি \
কয়েকদিন আগে পাঠক প্রিয় দৈনিক নবচিত্র পত্রিকায় চুয়াডাঙ্গা সদরের দীননাথ পুরে জিহাদের পাখিভ্যান ছিনতাই হওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ মানবিক ব্যাক্তিদের নজরে আসলে দীননাথপুরের ক্ষতিগ্রস্থ শিশু জিহাদের পরিবারকে একটি নতুন ভ্যান কিনে দিয়েছেন আলমডাঙ্গা উপজেলা ব্যবসায়ীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ” মানবতা ফাউন্ডেশন”। গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে দীননাথপুর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে শিশু জিহাদের পিতা বৃদ্ধ তাহাজ্জেল মিয়ার হাতে ভ্যানের চাবি হস্তান্তর করেন মানবতা ফাউন্ডেশনের সদস্যরা। উল্লেখ, গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় যাত্রীবেশে শিশু জিহাদের ভ্যানটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতকারী। এরপর থেকে পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়েন। কিছুতেই থামানো যাচ্ছিল না জিহাদের কান্না। ঘরে খাবার না থাকায় দুদিন বাড়িতে রান্নাবান্না হয় নি। শুক্রবার দুপুরে মসজিদ থেকে পাওয়া খিচুড়ি খেয়েই দিন পার করেছিলেন তারা। পরে এ নিয়ে দৈনিক নবচিত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে এগিয়ে আসেন মানবিক ব্যক্তিরা। তারা নগদ টাকা ও পুরো মাসের বাজার করে দেন। এছাড়া গত সোমবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জিহাদের পরিবারকে নগদ ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি নতুন ভ্যান পেয়ে খুশিতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন শিশু জিহাদের পিতা বৃদ্ধ অসুস্থ তাহাজ্জেল মিয়া। বৃদ্ধ তাহাজ্জেল মিয়া বলেন, আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনের সম্বল ভ্যানটি ছিনতাই হয়ে যাবার পর দিশেহারা হয়ে পড়ি। এতোটাই অভাবগ্রস্থ ছিলাম যে ভ্যান ছিনতাইয়ের পর দুদিন বাড়িতে কোন খাবার ছিল না। রান্নাঘরের চুলা পর্যন্ত জ্বলেনি। শুক্রবার মসজিদ থেকে পাওয়া খিচুড়ি খেয়েই দিন পার করেছিলাম। এখন নতুন ভ্যান পেয়ে আমি খুব খুশি। তিনি আরও বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী অসুস্থ। আমার ১২ বছর বয়সী ছেলে জিহাদ ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন করে তা দিয়েই টেনেটুনে চলে সংসার। ভ্যান ছিনতাই হবার পর সাংবাদিকদের নিউজের জন্যেই আজ নতুন ভ্যান পেলাম। সবার জন্য দোয়া রইল।
মানবতা ফাউন্ডেশন সদস্য ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায়ী ইউনুছ আলী বলেন, প্রত্রিকার থেকে ভ্যান চুরি বা ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানতে পারি। বিষয়টি অত্যান্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা। এরপর আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে একটি নতুন ভ্যান শিশু জিহাদের বাবার হাতে তুলে দিই। তিনি আরও বলেন, পড়াশোনার এই বয়সে শিশু জিহাদ ভ্যান চালিয়ে উপার্জন করুক এটা আমাদের কাম্য নয়। আমরা চাই শিশু জিহাদ লেখাপড়া করুক, সুশিক্ষায় শিক্ষিত হোক। লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারে সে এটা আমরা চাই। গ্রামবাসিসহ সকলকেই এই অসহায় পরিবারটি পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেন তিনি। দীননাথপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মামুন বলেন, জিহাদের মা দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ হয়ে বিছানাগত। তার বাবা এ্যাজমা রোগী তাই কর্ম করতে পারেন না। শিশু জিহাদ ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন করতো তা দিয়েই টেনেটুনে চলতো সংসার। এখন সর্বস্তরের মানুষ এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে তাই আমরা খুবই আনন্দিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *