চৌগাছায় সরিষার হলুদ ফুলে ঢেকে গেছে মাঠ \ মৌমাছির গুনগুন শব্দে আর ফুলের সুগন্ধে মুখারিত মানুষ

Share Now..

\ চৌগাছা প্রতিনিধি \
যশোরের চৌগাছায় বিস্তীর্ণ মাঠে চাষ হয়েছে সরিষা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষক। আগাম চাষ করা জমি ইতিমধ্যে ফুলে ভরে উঠেছে। সরিষার ফুলের সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে মাঠের পর মাঠ। মৌমাছি ফুলের মধু সংগ্রহে ছুটছে এক গাছ হতে অন্য গাছে। সব মিলিয়ে সরিষার ফুল প্রতিটি মাঠে সেজেছে অপরুপ এক সাজে।
সরিষা সকলের নিকট অতি পরিচিত একটি তেলজাত শষ্য। শীত মৌসুম এলেই চাষিরা জমিতে বপন করেন বীজ। এ অঞ্চলের কৃষক সরিষার চাষ করে ওই জমিতে আবার বোরো ধানের চাষ করেন। সে কারণে আগাম বপন করা জমি এখন হলুদের চাদরে ঢেকে গেছে। এক দিকে সরিষা ফুলের সুগন্ধ অন্যদিকে মৌমাছির গুনগুন শব্দ অন্য রকম এক সৌন্দর্য বিরাজ করছে মাঠ জুড়ে। গতকাল শনিবার উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে সৌন্দর্যের এই দৃশ্য চোখে পড়ে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চৌগাছা উপজেলাতে ২ হাজার ৯শ ৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বারী-১৪, ১৭, ১৮, টরি-৭, ভারতীয় বুলট জাত উল্লেখযোগ্য। এছাড়া দেশী জাতের সরিষার চাষও বেশ লক্ষনীয়। বেশ কিছু এলাকার চাষিরা আগাম জাতের সরিষার চাষ করেছেন ওই সব জমিতে এখন ফুল ফুটছে। আগাম চাষ করা সরিষা উঠার পর সেই সব জমিতে বোরো চাষ করা হবে বলে জানা গেছে।
বিগত বছর গুলোতে সরিষার চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া উপজেলার ফুলসারা গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম, বাটিকামারি গ্রামের মহিদুল ইসলাম, নগরবর্ণী গ্রামের আব্দুল্লাহ, সৈয়দপুর গ্রামের মুজিবর রহমান, কদমতলা গ্রামের মহবত আলীসহ একাধিক কৃষক বলেন, সরিষা হচ্ছে তেলজাত শষ্য। বাজারে সব ধরনের তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সরিষার তেলের কদর বহুগুন বেড়ে গেছে। এ ছাড়া সরিষার তেল স্বাস্থ্য সম্মত। তেল ও খোল দুটি জিনিষের ব্যাপক কদর থাকায় বাজারে সরিষার দামও ভালো। স্বল্প সময়ে এর চাষ হয় এবং উৎপাদন খরচও অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে কম। সে কারণে সরিষা চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরুপ ফলনের আশা করছেন চাষিরা।
কৃষকরা জানান, অনেকে আগাম রোপা আমনের চাষ করেন, সেই সব জমির ধান কেটে বপন করা হয়েছে সরিষা। সরিষা উঠার সাথে সাথে বোরো ধান লাগানো হবে। সরিষার অধিক ফলনে সহযোগিতা করে মৌমাছি। ফুল ফোটার পর জমিতে যতো বেশি মৌমাছির আগমনে ঘটবে ততো পরাগয়ান ঘটবে বাড়বে ফলন। তবে গত বেশ কয়েক বছর ধরে মৌমাছির সংখ্যা আশংকাজনক ভাবে কমে গেছে। মৌমাছি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে জমিতে যখন তখন মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার। ক্ষতিকর সার কীটনাশক ব্যবহারে সকলকে আরও সচেতন হতে হবে বল মনে করছেন সরিষা চাষে সফল্য পাওয়া এসব কৃষক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশাবির হোসাইন বলেন, চৌগাছার কিছু নিচু এলাকা ব্যাতিত প্রতিটি এলাকাতে কম বেশি সরিষার চাষ হয়েছে। সরিষা চাষ করে কৃষক যাত লাভবান হতে পারেন সে জন্য উন্নতজাতের সরিষা চাষে কৃষককে উদ্ধুদ্ধ করা হয়েছে, এমনকি বীজও বিতরণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষক সরিষা চাষে বেশ লাভবান হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *