চৌগাছার খড়িঞ্চা বাওড় হতে মাছ লুট \ সভাপতির কাছে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি

Share Now..

\ চৌগাছা প্রতিনিধি \
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে কিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষ উপজেলার খড়িঞ্চা বাওড়ের মাছ লুট করে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লুট হওয়া মাছের বাজার দর কমপক্ষে দেড়কোটি টাকা বলে জানান ভুক্তভোগীরা। শুধু তাই না বাওড় মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতির বাড়ির দরজায় ৩ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে একটি চিঠি রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। বাওড়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা জেলে পল্লীতে এখন ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যান পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নে অবস্থিত খড়িঞ্চা বাওড়ে চলে হরিলুট। এক শ্রেণীর মানুষ যারা সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দলের ছত্রছায়ায়, পটপরিবর্তনের সাথে সাথে তারও রুপ পরিবর্তন করে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাওড়ে। লুট করা হয় প্রায় দেড় কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। খড়িঞ্চা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি শ্রী ভরত কুমার বিশ্বাস বলেন, ২৮১ একর জলাশয়ে অবস্থিত খড়িঞ্চা বাওড়। বাওড়কে কেন্দ্র করে এর পাড়ে অন্তত ৩শ জেলে পল্লী গড়ে উঠে। যাদের একমাত্র আয়ের উৎস হচ্ছে বাওড়। রাত দিন পরিশ্রম করে বাওড় থেকে যা রোজগার করেন তাতেই চলে সংসার। কিন্তু এক দিনেই বাওড় হতে দেড় কোটি টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতি বছর ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দিয়ে বাওড়ে মাছ চাষ করি। যে ক্ষতি হয়ে গেছে তাতে পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকবো সেই চিন্তায় বিভোর আর সরকারের ঘরে টাকা জমা দেয়া তো বাদই রইল। তিনি বলেন, শুধু বাওড়ে লুট করেই থেমে নেই দুঃস্কৃতিরা, তারা আমার বাড়িতে ঘরের দরজায় ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে একটি চিঠি রেখে গেছে। চাঁদা না দিলে আমাকে মারার হুমকি দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের পর হতে এই পর্যন্ত খড়িঞ্চা বাজারে অবস্থিত আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারিনা, সন্ত্রাসীরা অব্যহত ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বাওড় পাড়ের খড়িঞ্চা, দেবুলয়, সাঞ্চাডাঙ্গা, স্বরুপদাহসহ বেশ কিছু গ্রাম ঘুরে এবং সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর ৫ ও ৬ আগস্ট খড়িঞ্চা বাওড় থেকে মাছ লুট করতে মেতে উঠে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। জেলেদের হুমকি দিয়ে তারা মাছ লুটে মেতে উঠে। যারা মাছ লুট করেছে তারা সুবিধাভোগী, যখন যে দল ক্ষমতায় আসে সেই দলে চলে যায়।
বাওড় পাড়ের হতদরিদ্র জেলে সন্তোষ কুমার, তপন কুমার, কর্ত্তিক কুমার বিশ্বাস, সাধন কুমার, বাদল, নিল কোমলসহ একাধিক জেলে বলেন, যে ক্ষতি আমাদের হয়ে গেছে তা কখনও কাটিয়ে উঠা সম্ভবপর না। প্রতিটি জেলে প্রায় ২ লাখ টাকা করে জমা দিয়ে বাওড়ের শেয়ারে আছে। এখন সমুদয় মাছ লুট হয়ে গেছে আমরা কি ভাবে খেয়ে পরে বেঁচে থাকবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *