ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে শিক্ষককে মারধর করে পুলিশে দিল স্থানীয়রা
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক শিক্ষককে মারধর করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা। অভিযুক্ত প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ডুমুরিয়া রুদুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আজ সোমবার দুপুরে স্কুলে গিয়ে তাকে স্থানীয়দের হাত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর মা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিভিন্ন সময় ধূমপান করে ক্লাসে প্রবেশ করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মুখে ধোয়া ছাড়াসহ যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। এ সব ঘটনায় গত ১৫ মে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, অভিযোগ করেও প্রতিকার না পাওয়ায় আজ সকালে বিক্ষুব্ধ অভিভাবক ও এলাকাবাসী এ ঘটনায় বিচার দাবি করে স্কুলটি ঘেরাও করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা অভিযুক্ত শিক্ষককে মারধর করে জুতার মালা পড়িয়ে দিতে চায়। এ সময় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসে।
বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রী জানায়, শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রায়শই ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করেন। বিষয়টি তারা অন্য শিক্ষিকাদের জানালে তারা ছাত্রীদের অভিযুক্ত শিক্ষক থেকে সতর্ক থাকতেন বলেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা জানান, প্রণব কুমার ভট্টাচার্য আমার মেয়েকে যৌন হয়রানি করেন। বিষয়টি মেয়ে আমাদের জানালে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু তারা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
ডুমুরিয়া রুদুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিতা দে বলেন, ঘটনাটি গত ১৫ মে জানতে পেরেছি। পরে সহকারী শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য ঘটনাটি শিকার করেন। একজন ছাত্রীর সঙ্গে এমন ঘটনা খুবই ন্যাক্কারজনক। এ ধরনের ঘটনা শিক্ষা পরিবেশকে বিনষ্ট করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আজ হঠাৎ তারা (অভিভাবক) এসে আমাকে মারধর করে। আমার বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থেকে থাকে তাহলে বিষয়টি আমাকে জানালে আমি তা সমাধান করতাম।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ছাত্রীকে যৌন হয়রানির বিষয়ে গত ১৫ মে ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবক লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। পরে বিষয়টি তদন্ত করতে সহকারী শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি প্রশিক্ষণে থাকায় তদন্ত করতে দেরি হয়। আজ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনোয়ারা থানার ওসি সোহেল আহমেদ জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।