জামিন পেলেন মায়ের ডায়ালাইসিসের খরচ জোগানো মুস্তাকিম
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ডায়ালাইসিস ফি বাড়ানোর প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া সেই যুবক সৈয়দ মো. মোস্তাকিম জামিন পেয়েছেন। রোববার (১৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতের বিচারক মো. অলি উল্লাহ তার জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে মোস্তাকিমের মানবাধিকার আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান গণমাধ্যমকে বলেন, দুই হাজার টাকার বন্ডে আইনজীবী ও স্থানীয় একজন ব্যক্তির জিম্মায় আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন।
জানা যায়, কিডনি ডায়ালাইসিস ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা গত সপ্তাহে আন্দোলন শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ জানুয়ারি মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনের দুপাশের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। ওই বিক্ষোভে অংশ নেন মোস্তাকিম। ওইসময় মুস্তাকিমের মা নাসরিন আক্তার চমেক হাসপাতালে স্যানডোর ডায়ালাইসিস সেন্টারে ডায়ালাইসিস নিচ্ছিলেন। নাসরিন আক্তারের দুটি কিডনিই বিকল। গত সাত বছর ধরে তিনি ডায়ালাইসিস করছিলেন। তার চার মেয়ে ও এক ছেলে। মাদরাসা পড়ুয়া ছেলে মুস্তাকিম টিউশনি করে পরিবার ও মায়ের চিকিৎসার ব্যয় বহন করে আছিলেন। মুস্তাকিমের এক বোন প্রতিবন্ধী।
এদিকে চমেক হাসপাতালের সেন্ডর ডায়ালাইসিস সেন্টারে ফি বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন মুস্তাকিম। অন্যদের সাথে গত ১০ জানুয়ারি মোস্তাকিমও বিক্ষোভে অংশ নেয়। ওইদিন দুপুরে এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের উপর চড়াও হয় পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। এসময় মুস্তাকিমকে আটক করে করে পুলিশ। পরে খবর পেয়ে ডায়ালাইসিস থেকে বের হয়ে থানায় গিয়ে পুলিশের মন গলাতে পারননি মুস্তাকিমের মা নাসরিন আক্তার। ওই রাতে ঘটনার উল্টো পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে অভিযোগ করে মুস্তাকিমকে এজাহারনামীয় এবং আরও অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।
পরের দিন তাকে আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। তবে আদালত বসার পরে তাকে হাজির করায় জামিন শুনানি করতে পারেননি মানবাধিকার আইনজীবীরা। পরের দিন রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড বাতিল করে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। একই সঙ্গে তার জামিন আবেদনও নাকচ করেন আদালত। রোববার আবারও জামিন আবেদন করলে বিচারক জামিন দেন মুস্তাকিমকে।