জেনা-ব্যভিচার বড় গোনাহসমূহের মধ্যে একটি 

Share Now..

অবৈধ যৌনাচার, জেনা-ব্যভিচার বড় গোনাহসমূহের মধ্যে একটি। হাদিসের পরিভাষায় ব্যভিচার এমন মারাত্মক কবিরা গোনাহ যে, ব্যভিচারে লিপ্ত হলে মানুষের ইমান তার থেকে বের হয়ে যায়। কুরআনুল কারিমে ব্যভিচারের দিকে ধাবিত হতে সুস্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছে। জেনা-ব্যভিচারকে অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَلاَ تَقْرَبُواْ الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاء سَبِيلاً
‘আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৩২)
ব্যভিচার অনেক মারাত্মক অপরাধ। যে কারণে ব্যভিচারের সময় মানুষের মাঝে ইমান অবস্থান করে না। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-
‘যখন কোন মানুষ ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তখন তার থেকে ইমান বের হয়ে যায়। ইমান তার মাথার উপর ছায়ার মত অবস্থান করে; যখন সে বিরত হয় তখন ইমান আবার ফিরে আসে।’ (তিরমিজি)
ব্যভিচারের ধরন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জেনা-ব্যভিচারের ধরনও উল্লেখ করেছেন। যাতে মানুষ সব ধরণের জেনা-ব্যভিচার থেকে মুক্ত থাকতে পারে। হাদিসের বর্ণনায় তাহলো-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আদম সন্তানের উপর ব্যভিচারের কিছু অংশ লিপিবদ্ধ হয়েছে; সে অবশ্যই তার মধ্যে লিপ্ত হবে। (তাহলো)-
> দুই চোখের ব্যভিচার হল দৃষ্টি;
> আর তার দুই কানের ব্যভিচার শ্রবণ;
> মুখের ব্যভিচার হল কথা বলা;
> হাতের ব্যভিচার হল স্পর্শ করা এবং
> পায়ের ব্যভিচার হল পদক্ষেপ আর
> অন্তরে ব্যভিচারের আশা ও ইচ্ছার সঞ্চার হয়, অবশেষে লজ্জাস্থান একে সত্যে অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।’ (মুসলিম)
জেনা-ব্যভিচার থেকে বাঁচার সর্বোত্তম উপায় ও উপকারিতা
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জেনা-ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকা। কবিরা গোনাহমুক্ত জীবন গড়া। এজন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন তাহলো-
১. নারী-পুরুষ অবিবাহিত হলে বিয়ে করা।
২. বিবাহিত হলে স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি এবং স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি মনোযোগী হওয়া।
বিয়ে করা সম্ভব না হলেৃ
১. একাকী বসবাস বা থাকা পরিহার করা।
২. বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করা; তার জিকির করা।
৩. জান্নাতের নেয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কে জানা।
৪. সপ্তাহিক (সোম ও বৃহস্পতিব) এবং মাসিক (আরবি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ) রোজা রাখা। তাতেও বিয়ে ছাড়া থাকতে কষ্ট হলে একদিন পর একদিন রোজা রাখা।
৫. বিপরীত লিঙ্গে দিকে না তাকানো ও কথা বলা থেকে বিরত থাকা। অর্থাৎ নারী ইচ্ছাকৃতভাবে পুরুষের দিকে আবার পুরুষ নারীর দিকে না তাকানো।
সর্বোপরি পাপ না করার জন্য মনকে দৃঢ়ভাবে স্থির করতে হবে। সব সময় আল্লাহকে ভয় করতে হবে। একান্ত নির্জনে থাকা অবস্থায় জেনা-ব্যভিচার সম্পর্কিত পাপ করার সম্ভাবনা থাকলে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় চোখ, কান, হাত-পা ও অন্তরের কামনা-বাসনাসহ জেনা-ব্যভিচারের সব ধরনের আক্রমণ থেকে নিজেদের হেফাজত করার তাওফিক দানর করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *