ঝিনাইদহে কাবিখা টিআর ও কাবিটার পোস্টমর্টেম, প্রকল্প সভাপতিদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
\ স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ \
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের কাশিমপুর গ্রামে “কাজের বিনিময়ে টাকা” (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় রাস্তা ফ্লাটসলিংয়ের জন্য ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। ২০২২ সালের ৯ মার্চ প্রকল্প অনুমোদন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. আব্দুর রশিদ ও ইউএনও সাদিয়া জেরিন। ২১ মাস পার হলেও কাশিমপুর গ্রামের হারুন জোয়ারদারের বাড়ি থেকে তরির দোকান ভায়া আক্কাসের বাড়ি পর্যন্ত সেই রাস্তা ফ্লাটসলিংয়ের কাজ হয়নি। প্রকল্পের পুরো টাকাই আত্মসাৎ করতে ওই রাস্তার কিছু অংশে নতুন করে পিচ করা হয়েছে। শুধু কাশিমপুর নয়, ২০২২/২০২৩ অর্থ বছরে প্রথম পর্যায়ের কাবিটা প্রকল্পে সদর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে বরাদ্দ ৫৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকা নয় ছয় করা হয়েছে। একই অর্থ বছরে কাবিখা সাধারণ বরাদ্দের দ্বিতীয় পর্যায়ের ৭৮ মেট্রিক টন গম, টিআর প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের সাধারণ উন্নয়ন বরাদ্দ ৪১ লাখ ১৬ হাজার টাকা, টিআর তৃতীয় পর্যায়ের বরাদ্দের ১৮ লাখ ৭০ হাজার, প্রথম পর্যায়ের চালের প্রকল্পের ৩৯ মেট্রিক টন, কাবিটা দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫৮ লাখ ৪১ হাজার ও টিআর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২১ লাখ ২৫ হাজার টাকার বেশির ভাগ কাজ ঠিকমতো হয়নি বলে সরজমিন দেখা গেছে। এছাড়া ২০২৩/২০২৪ অর্থ বছরে সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নে একই প্রকল্প ভিন্ন ভিন্ন নামে দেখিয়ে ২৫ লাখ নগদ টাকা ও সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন চাল দলীয় নেতাকর্মীরা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ। হলিধানী ইউনিয়নের শালিয়া গ্রামে আহলে হাদিস মসজিদ থেকে সদর উদ্দীনের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা উন্নয়নে নামে বেনামে পাঁচ বার প্রকল্প দেখিয়ে বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। শুধু দলীয় নেতাকর্মীরাই এসব প্রকল্পের টাকা নয় ছয় করেনি। হলিধানী ইউনিয়নের কাতলামারি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বনি আমিনকে মসজিদের সভাপতি বানিয়ে মসজিদ উন্নয়ন বাবদ ৫৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। হলিধানী ইউনিয়নের নাটাবাড়িয়া গ্রামে বারী মোল্লার বাড়ি থেকে বাদশা মোল্লার বাড়ি অভিমুখে রাস্তা মেরামতে ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। এই গ্রামে নওশের আলীর বাড়ি থেকে আব্দুল্লাহ বিশ্বাসের বাড়ি অভিমুখে রাস্তা সংস্কারের জন্য ৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হলেও প্রকল্প সভাপতি সাদ আহম্মেদ কোন কাজ না করেই দুই প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিনের সময় সদর উপজেলায় কাবিখা, টিআর ও কাবিটা প্রকল্পের কোন কাজই হয়নি। এই টাকায় তিনি ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন ভ্রমন করেছিলেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিউটন বাইন বলেন, উর্দ্ধতন (ইউএনও) কর্মকর্তারা যদি কাজ না চান তবে আমি কি করতে পারি। তিনি জানান, রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রকল্প সভাপতিদের কাছে অফিস জিম্মি ছিল।