ঝিনাইদহে ভাতিজার কাছে জমি বিক্রয়, রেজিস্ট্রেশন না করে দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ

Share Now..

\ ঝিনাইদহ অফিস \
ঝিনাইদহের ভাতিজার কাছে ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকায় বাড়িসহ ২২শতক জমি বিক্রয় করে, রেজিস্ট্রেশন না করে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হীরাডাঙ্গা গ্রামের প্রবাসী গোলাম মোস্তফা তার ভাতিজা মোঃ মাসুদ রানার কাছে ১৮৫ নং হীরাডাঙ্গা মৌজার ২৭২৮ নং দাগের বসত বাড়িসহ ২২ শতক জমি বিক্রয় করে। বাড়িসহ জমি বিক্রয়ের টাকা পরিশোধের পর জমি রেজিস্ট্রিশন না করে দিয়ে উল্টো ভাতিজাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছেন প্রবাসীর স্ত্রী যমুনা খাতুন। প্রতিবেশী নুরুল, রবিউল ও জুসনা জানান, গোলাম মোস্তফা দেশে থাকতেই অনেক টাকা দেনা হয়ে যায়। একরকম পালিয়ে সৌদি পাড়ি জমাই এবং সেখানে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে সমস্যায় পড়েন। তখন পারিবারিক ভাবে অভাব অনটন ও পাওনাদারের চাপাচাপিতে বাড়িসহ জমি বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয় গোলাম মোস্তফা ও তার স্ত্রী যমুনা খাতুন। তখন ভাতিজা মাসুদের কাছে ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা বসতবাড়িসহ ২২শতক জমি বিক্রয় করে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে এই জমি বিক্রয় করে যমুনার আপন ভগ্নিপতি শাহাদত বিশ্বাস ও রঞ্জু বিশ্বাসের মাধ্যমে টাকা নেয় যমুনা। আরো জানান, এই জমি একই গ্রামের রঞ্জুদের, এখনো গোলাম মোস্তফার নামে রেজিষ্ট্রেশন করা হয়নি। তারপরও রঞ্জুকে সাথে রেখেই উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে এই জমি বিক্রয় করা হয়েছে। এখন যমুনা মাসুদকে জমি রেজিস্ট্রি না করে দিয়ে উল্টো ভাতিজা মাসুদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। জমির টাকা লেনদেনের সময় একটা স্ট্যাম করা হয়েছিল। সেখানেও যমুনা, যমুনার ভগ্নিপতি শাহাদাত বিশ্বাস ও রঞ্জু সবার স্বাক্ষর করেছে। এখন জমি ফেরত নিতে নানা তাল বাহানা করে বেড়াচ্ছে এবং মাসুদ রানা সহ তার পরিবারের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা করে যাচ্ছেন যমুনা খাতুন। এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। হীরাডাঙ্গা গ্রামের রঞ্জু মিয়া বলেন, প্রবাসী গোলাম মোস্তফার স্ত্রী যমুনা মাসুদের কাছে বাড়িসহ জমি বিক্রয় করে প্রথমে ৩ লাখ টাকা নেই তার ভগ্নিপতি শাহাদাৎ বিশ্বাস এর মাধ্যমে।পরে আমার মাধ্যমে ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা লেনদেন করা হয়েছে। ওই জমির দাম অনুযায়ী মাসুদ সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করলে আমাদের মাধ্যমে একটা স্ট্যাম করে দিই। সেখানেও আমি ও যমুনার ভগ্নিপতি স্বাক্ষর করে দিয়েছি। তখন আমি যমুনা কোথায় থাকবেন বললে যমুনা বলে সে এখানে থাকবে না শহরে চলে যাবে, এবং যেহেতু এই জমি এখনো আমাদের নামে আছে সেজন্যই আমার মাধ্যমে এই লেনদেন করা হয়েছে। তবে মাসুদ ওই বাড়ি থেকে তার চাচিকে বের হবার জন্য কোন ধরনের হুমকি ধামকি বা চাপ প্রয়োগ করেনি। যমুনা কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে চলে গেছে। এখন মাসুদের নামে মিথ্যা মামলা করছে। যমুনা খাতুন বলেন, আমি মাসুদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম। আর আমার স্বামী ২ লাখ টাকা ধার নিয়েছিল। কিন্তু তারা আমার থেকে জমি বাবদ টাকা দিয়েছে বলছে। আমি তাদের কাছে এতো কম টাকায় জমি বিক্রয় করবো না। বর্তমান বাজারে এই জমির দাম অনেক। তারা আমার থেকে জোর করে স্ট্যাম লিখে নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমি তাদের কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছি সেই টাকা ফেরৎ দিবো। আমার জমি আমাকে ফেরৎ দিলে তার সাথে কোন ঝামেলা থাকবে না। মাসুদ রানা বলেন, আমার চাচা অনেক টাকা দেনা থাকার কারণে বসত বাড়ি বিক্রয় করতে চায়। আমি তখন ওই জমি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করি। ওই জমি আমার চাচার নামেও নয়, যার কারণে জমির মুল মালিক রঞ্জুর মাধ্যমে জমি বিক্রয়ের টাকা লেনদেন করা হয়েছে। সাথে সাথেই জমিটা রেজিস্ট্রেশন করে দেবার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করে দেয়নি। তবে স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়ে, উল্টো আমার নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমি এর সঠিক বিচার বা একটা সমাধান চায়। ঝিনাইদহ সদযর থানায় কর্মরত এস আই রোকনুজ্জামান বলেন, সেনাবাহিনীর টহল টিমের সাথে হিরাডাঙ্গা গ্রামে মাসুদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে জানতে পারি, মাসুদ তার চাচির কাছ থেকে বাড়িসহ ২২ শতক জমি ক্রয় করে। ওই জমি ক্রয়-বিক্রয় হলে একটা স্ট্যামও দেখতে পাই। তবে মাসুদের চাচি অভিযোগ করেছিল তাকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশীদের থেকে জানতে পারি জমি বিক্রয়ের পর বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল যমুনার। কিন্তু যমুনা বাড়ি না ছাড়লে ভাতিজা মাসুদ ওই বাড়িতে ওঠে। তখন যমুনা কোন ঝামেলা না করেই বাড়ি থেকে নেমে চলে যায়। পরে জানতে পারি যমুনা তার ভাতিজা মাসুদের নামে কোর্টে মামলা করেছে।

One thought on “ঝিনাইদহে ভাতিজার কাছে জমি বিক্রয়, রেজিস্ট্রেশন না করে দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *