ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা এতো সম্পদ কোথায় পেলেন ?

Share Now..


নবচিত্র রিপোর্টঃ
ঝিনাইদহ পৌরসভার স্টোর কিপার থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা বনে যাওয়া আসাদুজ্জামান চাঁন এখন নিজেই আলাদ্বীনের চেরাগ। শহরের চারিদেকে নামে বেনামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তার অঢেল সম্পদ। তবে এই সম্পদ তিনি কি ভাবে অর্জন করলেন তার সুনিদ্দিষ্ট কোন তথ্য নেই আয়কর অফিসে। পৌর সভার চেক জালিয়াতি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে ঝিনাইদহ শহরবাসিকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আসাদুজ্জামান চাঁন। তার এই সম্পদের উৎস্য নিয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নেমেছেন। অন্যদিকে পৌরসভার প্রায় কোটি টাকার চেক জালিয়াতি, হাট বাজার ইজারার টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ ও আয়করের টাকা নয় ছয় করার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছেন মন্ত্রনালয় থেকে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম। তিনি নিজেও এখন পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিমধ্যে তিনি বেশ কিছু ফাইল, ভাউচার ও চেক বই যাচাই বাছাই করার জন্য পৌর প্রশাসক নিয়ে গেছেন। প্রাতমিক ভাবে চেক জালিয়াতির সত্যতাও মিলেছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, আসাদুজ্জামান চাঁন প্রথমে স্টোর কিপার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। এরপর তিনি প্রধান সহকারী ও পদোন্নতি পেয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন। এই পদে নিয়োগ পেয়ে তিনি পৌরসভার হিসাব শাখায় ছড়ি ঘুরাতে থাকেন। সাবেক সচিব আজমল হোসেন ও নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল উদ্দীনের সঙ্গে যোগসাজস করে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে একের পর এক পৌরসভার ফান্ড থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে থাকেন। কি ভাবে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করা যায় সে বিষয়ে নিয়মিত একাউন্টস সেকশনে এই চক্রের বৈঠক হতো। আর এ ভাবেই আসাদুজ্জামান চাঁন গড়ে তোলেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। নিবিড় অনুসন্ধান করলে তার আরো সম্পদ ও জমানো টাকার সন্ধান মিলতে পারে বলে একাধিক পৌরসভার কাউন্সিলর মনে করেন। এদিকে ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ায় পৈত্রিক সুত্রে তিনতলা বাড়ির পাশাপাশি বাজার পাড়ায় জমি কিনে হাকিয়েছেন সাত তালা বাড়ি। বাড়িটি এখন নির্মানাধীন। এছাড়াও পাগলাকানাই পুজা মন্দিরের পাশে জমিসহ একটি বাড়ি ও পাগলাকানাই মোড়ে একটি পুকুর কিনেছেন। কাঞ্চনপুর মসজিদের পাশে রয়েছে জমি। শহরের বিভিন্ন স্থানে তার একাধিক জমি ও বাড়ির সন্ধান মিলেছে। রয়েছে বেশ কয়েকটি বাস ও ট্রাক। এদিকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১২ আগষ্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে উপ-সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন চিঠি দিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু ৫ মাস পার হলেও তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং তাকে সচিব পদে পদোন্নতি প্রদানের একটি চিঠি মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে মর্মে আসাদুজ্জামান চাঁন গনমাধ্যমকর্মীদের দেখিয়ে বেড়াচ্ছেন। যে স্মারকে তিনি চিঠিটি দেখাচ্ছেন সেই একই স্মারকে ২০২১ সালের ২৭ জুন পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু আসাদুজ্জামান চাঁনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন ও অন্যত্র বদলীর চিঠি দেন। এখন কোন চিঠি জাল ও কোন চিঠি আসল তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আসাদুজ্জামান চাঁন বলেন, আমার পরিবার অনেক আগ থেকেই ধনবান ও সম্পদশালী। এই সম্পত্তি তার পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া। তাছাড়া বাজারপাড়ার মধ্যে যে সুউচ্চ ভবন নির্মিত হচ্ছে তা ফ্ল্যাট বিক্রি করে অগ্রিম টাকায়। তিনি বলেন আগামীতে তিনি পাগলাকানাই ইউনিয়ন পরিষদে ভোট করবেন বলে একটি মহল তার বিরুদ্ধে এ সব মিথ্যা রটনা করছে। তিনি পৌরসভার চেক জালিয়াতির বিষয়ে জানেন না বলেও জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *