ঝিনাইদহ পৌরসভায় স্বাধীনতা পরবর্তী দলনিরপেক্ষ মেয়রের যাত্রা শুরু
আসিফ কাজল, ঝিনাইদহঃ
স্বাধীনতা পরবর্তী ঝিনাইদহ পৌরসভায় দলনিরপেক্ষ মেয়রের কার্যকাল শুরু হলো। সোমবার দুপুরে “জনতার মেয়র” খ্যাত কাইয়ূম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল দায়িত্বভার গ্রহন করেন। ঝিনাইদহ পৌরসভা মিলনাতায়নে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও পৌরসভার প্রশাসক ইয়ারুল ইসলাম নতুন মেয়রকে দায়িত্বভার বুঝে দেন। কাইয়ূম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল দায়িত্ব বুঝে নিয়ে কিছু সময় অফিস করেন ও পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে পরিচিত হন। এ সময় নবনির্বাচিত কাউন্সিলরবৃন্দ, পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ ১১ বছর পর সীমানা জটিলতা মামলা কাটিয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ১১ সেপ্টেম্বর। নৌকার প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারিয়ে দল নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসেবে কাইয়ূম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল মেয়র নির্বাচিত হন। এর আগে ১১ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু পৌরসভার মেয়র হিসেবে তার কার্যকাল শেষ করেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে ১৯৫৮ সালের ২৪ এপ্রিল স্বাধীনতা উত্তর ঝিনাইদহ টাউন কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগ সমর্থিত ডাঃ কে আহম্মেদ। তিনি দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ সালের পহেলা জুন মুসলীমলীগ সমর্থিত এস এম মতলুবুর রহমান টাউন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন। ১৯৬৫ সালের ৩ আগষ্ট থেকে ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত একই দলের আসাদুজ্জামান খান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব শেষ করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৪ সালে আওয়ামীলীগের প্রার্থী নুরুন্নবী সিদ্দিকীকে পরাজিত করে পৌরসভার নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এ্যাডভোকেট আমির হোসেন মালিতা। ১৯৭৭ সালে আইএলডি দলের প্রার্থী নুরুন্নবী ছামদানী পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি পৌর চেয়ারম্যানের পাশাপাশি এমপি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে জাসদ নেতা হিসেবে পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোশাররফ হোসেন মশা। পরে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। একাধারে তিনি ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ ও ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পৌরসভা শাসন করেন। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৩ সালে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী এস এম আনিছুর রহমান খোকা। ১৯৯৯ সালে আবারো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাপা প্রার্থী মোশাররফ হোসেন মশা। তার মৃত্যুজনিত কারণে উপ-নির্বাচনে ২০০২ সালে বিএনপি প্রার্থী আ.ক.ম মশিউর রহমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল মালেক ২০১১ সাল পর্যন্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের ২৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু পৌর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সীমানা জটিলতার মামলা চাপিয়ে নির্বাচন বন্ধ রাখা হয়। এদিকে দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় পৌরসভার নাগরিকরা সেবার মান নিয়ে হাফিয়ে ওঠে। জাল ভাউচার তৈরী করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। দোকান বরাদ্দের টাকা বেশির ভাগ ব্যক্তির পকেটে ওঠে। ড্রেন ও রাস্তাঘাটের জীর্নদশায় মানুষ ফুসে ওঠে। ট্যাক্স, কর, জমির প্ল্যান, জমি জরিপ ও সেবাখাতে ফি বৃদ্ধির কারণে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে বিকল্প চিন্তা করতে থাকে। অবশেষে গত ১১ সেপ্টম্বর পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাইয়ূম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল মেয়র নির্বাচিত হন।
Victory awaits Are you ready to claim it Lucky Cola