ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ২ লিফট বন্ধ করে নির্মাণ কাজ করায় দুর্ভোগ চরমে

Share Now..

\ ঝিনাইদহ অফিস \
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের লিফট বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে রোগী ও স্বজনরা। আইসিইউ ইউনিট নির্মানের কাজ চলমান থাকায় লিফট বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। জেলার একমাত্র ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৮ তলা সদর হাসপাতাল। যেখানে প্রতিদিন ৪’শ থেকে ৫’শ রোগী সেবা নিতে আসেন। আর হাসপাতলে ভর্তি থাকে প্রায় ৩’শ রোগী। রোগী ও স্বজনদের চিকিৎসা সেবা গ্রহনে দিনে বেশ কয়েকবার হাসপাতালের বিভিন্ন তলায় উঠা নামা করতে হয়। কিন্তু ৯ তলায় আইসিইউ ইউনিট নির্মানের কাজ চলমান থাকায় বন্ধ রয়েছে লিফট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সেবা নিতে আসা রোগীদের। লিফট বন্ধ থাকায় অসুস্থ রোগীরা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। রোগীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা না করেই দুটি লিফট বন্ধ করে চলছে নির্মানাধীন কাজ। শত শত রোগীর এমন কষ্ট আর দুর্ভোগ দেখার যেন কেই নেই। তাই দ্রæত ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানিয়েছেন রোগী ও স্বজনরা। সরোজমিনে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ৮তলা বিশিষ্ট হাসপাতালটির ৯বম তলার নির্মাণ কাজ ঢিমে তালে চলছে। দুইটি লিফট দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। দুটি লিফট বন্ধ রেখে ভবনের কাজ চলছে। লিফট বন্ধ থাকায় প্রসূতি নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে অক্ষম রোগীদের স্বজনেরা কোলে করে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠাচ্ছেন। অসুস্থ রোগীরা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তারপরও রোগীর স্বজনেরা ঝুকি নিয়েই রোগীদের ২য় তলা থেকে ৮ম তলা নিয়ে যাচ্ছেন সেবা পেতে। অনেক রোগী সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন সেবা না নিয়ে। তবে অভিযোগ আছে হাসপাতালে ২টা লিফটের মধ্যে ১নম্বর লিফট শুরু থেকেই ত্রæটিপূর্ণ। যা সারাবছরই বন্ধ থাকে। ২ নম্বর লিফট এককভাবে সার্ভিস দিয়ে আসছে। ৯তলার কাজ চলমান থাকার ফলে গত ২ সপ্তাহ ধরে ২টি লিফটই বন্ধ রয়েছে। যা আরো ১ মাস বন্ধ থাকবে। ঝিনাইদহ মোদনমোহন পাড়ার হাজারী চন্দ্র বিশ্বাস (৭৫) ঢাকা পোস্টকে জানান, তিনি গত ১ সপ্তাহ আগে পায়ের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। হাসপাতালের সেবা নিতে লিফট বন্ধ থাকাই ছেলেদের কোলে করে উপরে উঠেছে। পায়ের ড্রেসিং করাতে গেলেও তাকে অন্যের সাহায্য নিতে হয়। শৈলকুপা উপজেলা গাড়াগঞ্জ এলাকার শাহিদা বেগম (৭০) ঢাকা পোস্টকে জানান, তিনি মাজার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন সেবা নিতে। হাটে চলাফেরা করতে অনেক কষ্ট হয়। তার পরও হাসপতালের লিফট বন্ধ থাকাই তাকে কষ্ট করে সিড়ি বেয়ে ডাক্তার দেখাতে হচ্ছে। এভাবে উপরে উঠা নামা করে তার মাজার সমস্যা আরো বেড়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামের জিয়াউর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, ফুপাতো ভাইয়ের সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে গেছে। খোঁড়াতে খোঁড়াতে হাসপাতালের ৬ তলায় এসেছে ডাক্তার দেখাতে। আর ৬ তলায় উঠতে তার হার্ট বিট বেড়ে গেছে। আবার প্রতিদিন ৪ তলায় নেমে ড্রেসিং করাতে হচ্ছে। তাহলে দেখেন কত কষ্ট করে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। তাই হাসপাতালের বন্ধ লিফট দ্রæত চালুর দাবি জানাচ্ছি। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবক তথ্যদানকারি রহিমা খাতুন ঢাকা পোস্টকে জানান, হাসপাতালের দুইটা লিফট দুইটাই ১৫ দিনের বেশি হলো বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ৯তলাই কাজ করাই এই লিফট গুলো বন্ধ রেখেছে। লিফট বন্ধ থাকাই সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে গিয়ে দুইজন প্রসূতি মায়েরা সিড়িতেই বাচ্চা প্রসব করেছে। উপরের কাজ এখনো অনেক বাকি রয়ে যার কারণে এখনো অনেক দিন লিফট বন্ধ থাকবে। ঠিকাদারের ম্যানেজার মোঃ মাহবুব ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, হাসপাতালের নবম তলার কাজ চলমান রয়েছে। লিফট বন্ধ রেখেই কাজ করতে হচ্ছে। লিফট চালু হতে আরো অন্তত এক মাসের বেশী সময় লাগতে পারে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল তত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাসপাতালের লিফট বন্ধ থাকাই পায়ে চলা সিড়ি বাদে কোন বিকল্প ব্যবস্থা নাই। যতদিন নবম তলার কাজ শেষ না হচ্ছে ততদিন লিফট বন্ধ থাকবে, যার কারণে আমাদের কিছু করার নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *