টেস্ট ফরম্যাটে একই সঙ্গে চূড়ায় ও তলানিতে মুমিনুল
মাঠ ভেজা থাকায় কারণে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে স্যাবাইনা পার্কে খেলা হয় মোটে ৩০ ওভারের সেটিও শেষ সেশনে। তবে এরমধ্যেও আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে হারিয়েছে দুই উইকেট। কেমার রোচের পর পর দুই ওভারে ফিরেছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হক। ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন এনেও ব্যাটারদের আগে উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার থামানো যায়নি।
ব্যর্থতার বৃত্তে আটকা থাকা জয় ফিরেন ৩ রান করেই আর মুমিনুল হক তো এই ইনিংসে ফিরেছেন কোনো রান না করেই। তাতেই তিনি নিজের নামের পাশে যুক্ত করেন এক লজ্জার কীর্তি। টেস্ট ফরম্যাটে দেশের সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরী এবং ডাকের ইনিংস খেলার রেকর্ড এখন তার দখলে। বাংলাদেশ দলের টেস্ট ফরম্যাটের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবেই পরিচিত মুমিনুল হক সৌরভ। গেল বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১২১ রানের অপরাজিত ইনিংসের খেলার মধ্য দিয়ে মুশফিকুর রহিমকে পেছনে ফেলে টেস্ট ফরম্যাটে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির মালিক বনে যান মুমিনুল হক ১৩ সেঞ্চুরি করে এখন তিনি রয়েছেন চূড়ায়। তবে এবার তলানিতেও নিজের নাম যুক্ত করলেন তিনি। যেটির নজির আর নেই। একইসঙ্গে চূড়া আর তলানিতে আছেন কেবল তিনি একাই।
গতপরশু শূন্য রানে আউট হয়ে সবচেয়ে বেশি ডাক মারার রেকর্ডটি একার করে নিয়েছেন মুমিনুল। ১৭ বার আউট হলেন তিনি। নিজের সবশেষ ১১ ইনিংসে চারবার মেরেছেন ডাক। এর আগে দেশের ক্রিকেটে রেকর্ডটি ছিলো মোহাম্মদ আশরাফুলের দখলে তিনি ১৬ বার শূন্যতে আউট হয়েছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক টেস্টে সবচেয়ে বেশি শূন্য রানে ফেরার বিশ্বরেকর্ড ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার কোর্টনি ওয়ালশের। ৫০০ উইকেট শিকারি প্রথম বোলার তার ক্যারিয়ারে শূন্য রানে ফিরেছেন ৪৩ বার। স্টুয়ার্ট ব্রডের শূন্য ৩৯টি, ক্রিস মার্টিনের ৩৬টি, গেøন মাকগ্রা ৩৫টি। তবে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২২ বার শূন্যতে সাজঘরে ফিরেছেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটার মারভান আতাপাত্তু। হয়তো তিনিও তাকিয়ে আছেন মুমিনুলের দিকে। যে গতিতে মুমিনুল ডাকের পর ডাক মেরে সাজঘরে ফিরছেন খুব বেশি সময় লাগবে না তাকে ছাড়িয়ে যেতে। এদিকে তীব্র সমালোচনায় কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দেশের টেস্ট দলের ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ২০২১ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে লাল বলে তার আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় তার। সেখান থেকেই তার ব্যর্থতার গল্প শুরু, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ইনিংসে তিনি সাজঘরে ফিরেছেন কোনো রান না করেই। তবুও তাকে বার বার ঘুরে দাড়ানোর সুযোগ দেয় নির্বাচকরা, সেই বিবেচনায় সাদা পোশাকে দলের ওপেনিংয়ে নিয়মিত মুখই বলা যায় তাকে, সব মিলিয়ে ইতিমধ্যে খেলে ফেলেছেন ১৭ টেস্টের ৩১ ইনিংস, তবে এখনও উইকেটে থিতু হওয়ার কৌশল রপ্ত করতে পারেননি তিনি এর মধ্যে ফিফটি পেয়েছেন চারটি ও সেঞ্চুরি একটি। তবে মজার বিষয় হচ্ছে তার খেলা ৩১ ইনিংসের মধ্যে জয় ২০বারের বেশি আউট হয়েছেন স্লিপে কিংবা উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের তার খেলা সবশেষ তিন ইনিংসেও তিনি সাজঘরে ফিরেছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়েই। তার এমন হতশ্রী ব্যাটিংয়ে প্রায় প্রতিম্যাচেই বাংলাদেশকে শুরুতেই হারাতে হয় উইকেট। আর কতগুলো ম্যাচ খেলার পর জয় নিজের ভুল শুধরানোর চেষ্টা করে দলকে একটি দারুণ সূচনা এনে দিবেন সেটাই এখন জানতে চান সমর্থকরা।