তিস্তার জল কতোটা গড়াবে?

Share Now..


অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে এক দীর্ঘমেয়াদী অমিমাংসিত ইস্যু। দু’দেশের মধ্যে ১৯৯৬ সালে একমাত্র গঙ্গা নদীর পানির বণ্টনের চুক্তি সই হলেও তিস্তাসহ আলোচনায় থাকা ৮টি নদীর পানি ভাগাভাগির ব্যাপারে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।মানি কন্ট্রোল পোর্টালে তিস্তা চুক্তি নিয়ে এক বিশ্লেষণধর্মী মতামত প্রকাশ করেন প্রণয় শর্মা। সেখানে তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের পথে একমাত্র বাধা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। কারণ এই পদক্ষেপে কোনো রাজনৈতিক লাভ নেই।

মমতা যুক্তি দেখিয়ে বলেছিলেন, বছরের পর বছরে ধরে কমেছে তিস্তার পানির স্তর। যার কারণে বাংলাদেশকে পানি দেওয়া প্রকৃতপক্ষে সম্ভব হয়নি।

১৯৮৩ সালে ২৫তম জেআরসি’র বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টন বিষয়ে একটি এডহক চুক্তিতে দুই দেশ সম্মত হয়। এতে ২৫ শতাংশ অবণ্টন রেখে ৭৫ শতাংশ পানি বাংলাদেশ ৩৬, ভারত ৩৯ শতাংশ প্রাপ্তির বিষয়ে এই চুক্তি হয়। তবে এই বণ্টন কোথায় কী পদ্ধতিতে হবে তা বলা হয়নি। প্রণয় শর্মার দাবি, এর সুযোগ নেয় ভারত। ভারত গজলডোবায় ১৯৮৭ সালে ব্যারেজ নির্মাণ করে ৯ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর এলাকায় শুরু করে সেচ কাজ। ভারত নিজের ইচ্ছামত তিস্তার পানি প্রত্যাহার করতে থাকে বা করে যাচ্ছে। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ লালমনিরহাটের দোয়ানিতে তিস্তা ব্যারেজ বা সেচ প্রকল্প চালু করলেও সেটি কোনো কাজে আসেনি।

২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে চুক্তি হয়নি। এরপর ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশকে শুধু প্রতিশ্রুতিই দিয়ে আসা হচ্ছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের দ্বিতীয় দিন (৬ সেপ্টেম্বর) তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিসহ ভারত ও বাংলাদেশের অন্য অমীমাংসিত বিষয়গুলোর দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ‘ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং নিকটতম প্রতিবেশী। গত ৫০ বছরে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব তৈরির মাধ্যমে দুই দেশ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করছে’।

মঙ্গলবার দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের জুলাই মাসে মমতা ব্যানার্জিকে লেখা চিঠিতে সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লি সফরের সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করার আশা প্রকাশ করেছিলেন। ১২ জুলাই লেখা ওই চিঠিতে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আশা করি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ভারত সফরের সময় আপনার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হবে।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে ‘দুই বাংলার’ ভাষা ও সংস্কৃতির অভিন্নতা এবং ‘আদর্শগত সম্পর্ক’ উল্লেখ করে বলেন, ‘বিদ্যমান সম্পর্ককে সুসংহত করতে একসঙ্গে কাজ করার বিকল্প নেই’।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ঢাকা সফর না করায় ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ঝুলে রয়েছে। শেখ হাসিনার এবারের সফরে এই চুক্তি সই হতে হলে মমতাকে ভারতের প্রতিনিধিদলে থাকতে হবে।

1,427 thoughts on “তিস্তার জল কতোটা গড়াবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *