তীব্র গরমে ফল ও শরবতের বাজারেও সিন্ডিকেট

Share Now..

অতি তীব্র তাপপ্রবাহে একটু স্বস্তির জন্য এক গ্লাস শরবতের প্রয়োজন, কিন্তু সেখানেও পড়েছে সিন্ডিকেটের থাবা। গরমকে পুঁজি করে তারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে দেশি ও আমদানিকৃত ফল এবং শরবতের। ক্রেতার চাহিদা যখন তুঙ্গে, বিক্রেতা দামও হাঁকিয়ে নিচ্ছেন আমদানিজাত ফলসহ সকল ধরনের ফলের। এ পরিস্থিতিতে অসহায় পড়েছেন ভোক্তারা। তারা বলছেন, বাজারে চলছে হরিলুট যা দেখার কেউ নেই।

সড়কের পাশে খোলা ভ্যানের ওপর লেমন সুগার মেশিন স্থাপন করে দীর্ঘদিন ধরে মৌসুমি ব্যবসা করছেন মিরাজুল হক। কয়েক রকমের শরবত তৈরি করেন এ মেশিনে। গরমে চাহিদা যখন তুঙ্গে, তখন দাম বাড়িয়ে প্রতি গ্লাস শরবত বিক্রি করছেন ৩০ টাকায়। তিনি বলেন, লেবু ও পানিসহ শরবত বানানোর অন্যান্য অনুষঙ্গের দাম বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে শরবতের দামও বাড়াতে হয়েছে।

আর ক্রেতারা বলছেন, গরমকে পুঁজি করে দাম বেড়েছে প্রতি গ্লাস শরবতের। এখানেও সিন্ডিকেট শুরু হয়ে গেছে। আগে যেখানে ১০ টাকায় এক গ্লাস শরবত পাওয়া যেত, সেখানে প্রতি গ্লাসে এখন গুনতে হচ্ছে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

শহরের রিক্সা স্ট্যান্ডে, পৌর মার্কেটের সামনে এবং বাস টার্মিনালে ৫-৬ টি দোকান থাকলেও এখন দোকানের বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০টির মতো। শহরের আলহাজ্ব মোড় থেকে রেলগেট হয়ে বাজার এবং কলেজ রোডে কয়েক হাত দূরে দূরে বিক্রি হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ লেবুপানি ও শরবত।

এদিকে, তীব্র গরমে আখের রসের চাহিদা বাড়ায় বিক্রি বেড়েছে আব্দুর রবের। তিনি বলেন, গরমের সুযোগে আখের আঁটি ৫০০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছেন ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে। ফলে বেড়েছে রসের দামও।

হাহাকার যখন গরমে, এক গ্লাস শরবতই তখন প্রশান্তি এনে দেয় অনেকের। তবে লেবু, বিট লবণ, বরফ কেউ আবার শরবতের রং সুন্দর করার জন্য মেশায় কৃত্রিম রং, অরেঞ্জ পাউডার। স্বাদ মিষ্টি করার জন্য স্যাকারিন, টেস্টিং সল্টও মেশানো হয়। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, সেগুলো কতটা মানসম্মত?

ভোক্তারা বলেন, রাস্তার ধারের এসব শরবত, পানীয় মানসম্মত নয়। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচতে না খেয়েও উপায় নেই।

ভ্যানচালক শাহাবুল বলেন, এই গরমে ভ্যান চালাতেও কষ্ট হচ্ছে। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। শরবত খেলে অনেক ভালো লাগে, শরীর ভালো রাখার জন্য বেশি দামেই খেতে হচ্ছে।

এদিকে, তীব্র ও অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে যারা বের হচ্ছেন, অনেকেই বাড়ি ফিরছেন তরমুজ, বেল,ডাব ও পেঁপে ফল কিনে। এ সুযোগে তরমুজ ৭০ টাকায় কেজি বিক্রি করছেন ঈশ্বরদীর ফুটপাতের ও দোকানের ফল ব্যবসায়ীরা। ১৫ দিন আগে বিক্রি হওয়া ৩০-৪০ টাকার বেলের দাম এখন দ্বিগুণ।

ক্রেতারা বলেন, ফলের বাজারে আবারও সিন্ডিকেটের থাবা। দাম বাড়িয়ে কাটা হচ্ছে ভোক্তার পকেট। আর বিক্রেতারা বলেন, চাহিদা বাড়ায় সরবরাহ সংকটে দাম বেড়েছে। চাহিদা না কমলে দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

প্রখর সূর্যতাপ আর ভ্যাপসা গরমে চাহিদা বেড়েছে হরেক রকমের বিদেশি রসালো ফলের। তবে অধিকাংশই বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ৩০-৫০ টাকা বেড়ে মাল্টার দাম ঠেকেছে কেজিতে ৩০০-৩৩০ টাকায়। দাম বেড়েছে নাশপাতিসহ সব ধরনের আমদানি ফলের।

ক্রেতারা বলছেন, চাহিদা বাড়লেই আমদানি আর যোগান কমের অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে অসাধু সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা, যা দেখার কেউ নেই।

প্রসঙ্গত, ঈশ্বরদীতে বইছে টানা অতি তীব্র ও তীব্র তাপপ্রবাহ। মঙ্গলবার (৩০ এপিল) বিকাল সাড়ে ৩টায় ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সকাল থেকেই চোখ রাঙাচ্ছে সূর্য। দিনের মতো তাপমাত্রা থাকছে রাতেও। গরমে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষ। 

One thought on “তীব্র গরমে ফল ও শরবতের বাজারেও সিন্ডিকেট

  • May 1, 2024 at 5:48 pm
    Permalink

    you are in reality a good webmaster The website loading velocity is amazing It sort of feels that youre doing any distinctive trick Also The contents are masterwork you have done a fantastic job in this topic

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *