ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ গাজাবাসীর ওপর ইসরাইলি হামলায় নিহত ২১
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনাদের ফের হামলায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছে। এনিয়ে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত বেড়ে ৩১ হাজার ৩৪১ জনে দাঁড়ালো।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গাজার উত্তরাংশের একটি গোলচত্বরে ত্রাণবাহী ট্রাকবহরের জন্য অপেক্ষা করে থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর গুলিবর্ষণে অন্তত ২১ জন নিহত ও ১৫০ জনেরও বেশি আহত হয়। এই হামলাকে একটি নতুন পূর্বপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ বলে অভিহিত করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যদিও এক বিবৃতিতে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে হামলার কথা অস্বীকার করে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনগুলোকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছে। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি হামলায় গাজা ভূখণ্ড প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, নিহত হয়েছে ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আর আহত ৭৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার ২৩ বাসিন্দার প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে গেছে। কঠোর অবরোধ ও অবিরাম হামলার মধ্যে থাকা গাজাবাসী অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে। ইতিমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে। ত্রাণবাহী ট্রাক দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে, ত্রাণের জন্য হুড়োহুড়ি করছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৯ ফেব্রুয়ারি গাজা সিটির কাছে ত্রাণ বিতরণের জন্য অপেক্ষারতদের ভিড়ের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়। তবে এই ঘটনার জন্য ইসরাইল ত্রাণের জন্য বেপরোয়া লোকজনের হুড়োহুড়িকে দায়ী করে বলেছে, নিহতদের অনেকে পদদলিত হয়ে অথবা ত্রাণবাহী ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছে। গাজার বাসিন্দারা জানান, বৃহস্পতিবার রাতভর ইসরাইলের বাহিনীগুলো ধারাবাহিকভাবে দক্ষিণের রাফা শহরসহ পুরো ভূখণ্ডজুড়ে আকাশ ও স্থল হামলা চালায়। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ইসরাইলের হামলায় এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো গাজা। ইসরাইলের হামলা থেকে বাদ পড়েনি ধর্মীয় স্থাপনাও। ফলে রমজান মাসেও নামাজের স্থান পাচ্ছেন না গাজাবাসী।
গাজার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গাজায় অবস্থিত এক হাজার ২০০ মসজিদের মধ্যে অন্তত এক হাজার মসজিদ পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের হামলায় ইমাম, মুয়াজ্জিন ও হাফেজসহ শতাধিক ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব নিহত হয়েছেন। গাজার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রমজান মাসের তারাবিহ নামাজের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না, কারণ মসজিদগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। এমনকি অজু করার জন্যও মিলছে না পানি। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারপরেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। হামাসকে নির্মূলের অভিযানের নামে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। এতে প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ এবং শিশুরা।
Connect with gamers from around the world in our online games! Lucky Cola