দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের শীর্ষ বৈঠকের আগে উত্তেজনা

Share Now..


প্রায় এক যুগ পর দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের প্রাক্কালে উত্তর কোরিয়া এক শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। মার্কিন প্রশাসন পিয়ংইয়ংয়ের কড়া সমালোচনা করেছে।উত্তর কোরিয়ার মতো প্রতিবেশী দেশের সামরিক আস্ফালন দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের জন্য সব সময়ে দুশ্চিন্তার কারণ। আঞ্চলিক পরাশক্তি হিসেবে চীনের মতিগতিও এই দুই গণতান্ত্রিক দেশের জন্য অস্বস্তিকর। সৌল ও টোকিও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। অথচ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে চাপা উত্তেজনা রয়ে গেছে। সে কারণে দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর পর দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্টের জাপান সফর বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। তার উপর বৃহস্পতিবার সফর শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে উত্তর কোরিয়া কোরীয় উপদ্বীপ ও জাপানের মাঝে সমুদ্রের উপর সম্ভবত এক আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করায় উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল।আসলে উত্তেজনার আবহ চলতি সপ্তাহের শুরুতেই বেড়ে গেছে। দক্ষিণ ও কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল সামরিক মহড়াকে বৈরি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে পিয়ংইয়ং। এর জবাব হিসেবে পরমাণু শক্তিধর দেশটি বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, বৃহস্পতিবারের আইসিবিএম ধাঁচের প্রজেক্টাইল ক্ষেপণাস্ত্রটি ৬,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি উচ্চতায় প্রায় ৭০ মিনিট ওড়ার পর সমুদ্রে আছড়ে পড়ে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া এই পদক্ষেপের কড়া নিন্দা করেছে।দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়েওল সামরিক বাহিনীকে পরিকল্পনা অনুযায়ী আমেরিকার সঙ্গে ১১ দিনের মহড়া চালিয়ে যাবার নির্দেশ দিয়েছেন। তার মতে উত্তর কোরিয়াকে ‘বেপরোয়া প্ররোচনা’-র মূল্য চোকাতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের পর আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার এত বড় আকারের সামরিক মহড়া দেখা যায় নি। ওয়াশিংটনে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে। তার মতে, সে দেশ অকারণে গোটা অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। ওয়াটসন মনে করিয়ে দেন, যে এই উৎক্ষেপণের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে।এমন উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিশিদা ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন টোকিওতে মিলিত হচ্ছেন। দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিবাদ কাটিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে চান দুই নেতা। উত্তর কোরিয়াসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মুখে ঐক্যের উপর জোর দিতে চায় দুই দেশ। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সময় যৌথভাবে নজরদারি চালানো এবং সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর অঙ্গীকার করছে টোকিও ও সৌল। বৃহস্পতিবারের ঘটনা সেই উদ্যোগ আরও জোরালো করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। ১৯১০ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপান কোরীয় উপদ্বীপ দখল করে রাখলেও সে বিষয়ে যথেষ্ট অনুশোচনা প্রকাশ না করায় দক্ষিণ কোরিয়ায় এখনো ক্ষোভ দূর হয় নি। সেইসঙ্গে অন্যান্য বিষয়েও মতবিরোধ দানা বেঁধেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *