দল নিয়ে গর্বিত শান্ত

Share Now..

তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেনদের মতো তারকা কেউই নেই টাইগারদের এবারের নিউজিল্যান্ড সফরে। তার পরও নিউজিল্যান্ডে পা রাখার পর থেকেই অন্যরকম এক আত্মবিশ্বাস নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলেছিল শান্তবাহিনী। কিউদের দেশে তাদের বিপক্ষে ওয়ানডে ফরম্যাটে প্রথম ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেতে মরিয়া হয়ে ছুটছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে না পারলেও তৃতীয় ম্যাচে ঠিকই নিজেদের লক্ষ্য ছুঁতে সক্ষম হয়েছে তারা। আর এই কীর্তি গড়ার পর নিজের এই তরুণ দল নিয়ে গর্বিত শান্ত।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে সমানে সমানে স্বাগতিকদের বিপক্ষে লড়লেও বৃষ্টির কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ব্ল্যাক ক্যাপসদের কাছে পাত্তাই পায়নি। ঐ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল নেপিয়ারে। ম্যাচের আগে টাইগার কোচ হাথুরুসিংহে জানিয়েছিল এই ম্যাচটি হতে যাচ্ছে বড় স্কোরের। তবে টাইগার ব্যাটাররা ব্যর্থ হওয়ায় কোনো রকম লড়াই না করেই হেরে যায়। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচের উইকেট দেখে ভিন্ন রকম মনে হলো নাজমুল হোসেন শান্তর। টস জিতে তিনি বেছে নিলেন বোলিং। নিউজিল্যান্ডকে নাগালের মধ্যে আটকে রাখার লক্ষ্যই ছিল তাদের। 

কিন্তু কিউইরা ১০০ রানও করতে পারবে না, তা ধারণাও করতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। নিয়মিত তিন পেসার ও দলের পেস অলরাউন্ডার সৌম্য সরকারের বোলিং তাণ্ডবে জ্বলে-পুড়ে গেল কিউইদের গোটা ব্যাটিং লাইন আপ। এতে করে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের চতুর্থ সর্বনিম্ন রানে অলআউট হয়ে যায় কিউইরা। বাংলাদেশও জিতে যায় কোনো রকম পরীক্ষা ছাড়াই। তৃতীয় ম্যাচে দলের এমন পারফরম্যান্সে গর্বিত অধিনায়ক শান্ত। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ছেলেরা যেভাবে খেলেছে তাতে আমি গর্বিত। সিরিজ শুরু হওয়ার আগে, আমরা সিরিজ জেতার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে জিততে পারিনি, আজকে জিততে পেরেছি।’

এদিকে গতকাল ম্যাকলিন পার্কের উইকেটে এ দিন ঘাসের ছোঁয়া ছিল বেশ। তবে নিউজিল্যান্ডে এটা নতুন কিছু না। সীমিত ওভারের ম্যাচের পিচগুলোয় অনেক সময় ঘাস থাকলেও দেখা যায় তা ব্যাটিং সহায়কই থাকে। এবার ব্যতিক্রম। উইকেটে সিম মুভমেন্ট মিলল বেশ। কিউই ব্যাটসম্যানদের আরও বড় পরীক্ষার কারণ হয়ে দাঁড়াল উইকেটের অসমান বাউন্স। এ প্রসঙ্গে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘আজকে উইকেটের অবস্থা ভিন্ন ছিল। পেসারদের জন্য সহায়তা ছিল। সকালে একটু মনে হয় আর্দ্রতাও ছিল। ওটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। টস জয়টা খুব ভালো ছিল। গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে বোলাররা কতক্ষণ লম্বা সময় ধরে ভালো জায়গায় বল করতে পারে। ওরা করতে পেরেছে বলেই এরকম রানে ওদেরকে আটকে রাখতে পেরেছি।’ 

তবে টাইগার অধিনায়ক কল্পনাও করেনি যে ১০০ রানের আগেই অলআউট করতে পারবে কিউদের তাও তাদের মাটিতে। এমনটি জানিয়ে বলেন, ‘ওরকম তো (৯৮ রানে অলআউট) চিন্তা কখনোই করিনি। তবে আমরা পুরো সিরিজেই প্রক্রিয়াটা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আজকে যখন লম্বা সময় ধরে ভালো বোলিং করেছি, তখন উইকেট পড়েছে। এরকম আশা নিয়ে আসিনি যে ১০০ বা ৯৮ রানে অলআউট করে দেব। পরিকল্পনা ছিল ভালো জায়গায় লম্বা সময় বোলিং করা। খুবই গর্ববোধ করছি, আগের দুই ম্যাচ হারার পর আজকে ওরা যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’

গেল বছর নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম বারের মতো টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ, এবার ওয়ানডেতেও এলো জয়। এই সফরেই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। তৃতীয় ওয়ানডেতে জয়ে আত্মবিশ্বাস পেলেও আলাদা ফরম্যাটে ভিন্ন পরিকল্পনার কথাই বলছেন শান্ত। বলেন, ‘এই ম্যাচ আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে কিন্তু টি-টোয়েন্টি আলাদা ফরম্যাট। আমরা ওভাবেই তার জন্য পরিকল্পনা করব। আমরা কিছু জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার চিন্তা করেছি, কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে কিছুদিনের ভেতরই টি-টোয়েন্টি খেলতে হবে।’ আগামী ২৭ ডিসেম্বর সিরিজের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *