দিনটি শুধুই মায়ের!
মায়েরা প্রতিটি সন্তানের কাছে এক আলাদা টান, তা হবে নাই বা কেন, এটান যেন নাড়ি চেরা টান! এই টানকে স্বীকৃতি প্রতিটি সন্তানই দেন। মায়ের সঙ্গে সন্তানের যে মধুর সম্পর্ক থাকে তাকে অস্বীকার করতে পারেই বা কে। তবে মাকে হয়তো নিজের ব্যস্ততায় সেভাবে সময় দেওয়া যায় না। এজন্যই গোটা বিশ্বে কিছু দিবস উদযাপিত হয়। আমাদেরও তাগাদা দেয় এই বিশেষ দিনগুলো। মা দিবস এ দিনগুলোর একটি। মা দিবসে যদি মাকে খুশি করতে চান তাহলে মাকে চমকে দেওয়ার মতো কিছু করতে পারেন।
গিফট বাস্কেট
মায়ের পছন্দের জিনিসপত্র দিয়ে একটি গিফট বাস্কেট বানিয়ে নিন। পছন্দের আইটেমে চকলেট, খাবার, পারফিউম, বিস্কিট, পছন্দের প্রসাধনীর সমন্বয় থাকতে পারে। অনেক দিন ধরেই হয়ত মা ছোট ছোট কিছু জিনিস কিনতে চাচ্ছেন কিন্তু নানা অজুহাতে কেনা হয়ে উঠছে না। সেসব মাথায় রেখে বাস্কেট সাজান। সাজানোর সময়েও নিজের যত্নবান চরিত্রের পরিচয় দিন। মা দিবসের আগেই জেনে নিন আপনার মায়ের পছন্দ কী, সেই মতন মায়ের জন্য উপহার কিনে আনুন। মায়ের জন্য কেনা গিফট মা দিবসে তাকে দিন। তাতে আপনার মা খুব খুশি হবেন।
চমকে দিন
মাকে এই বিশেষ দিনে চমকে দেওয়ার গুরুত্ব আলাদা। খুব সাধারণ কিছু দিয়েই কিন্তু চমকে দেওয়া যায় সহজে। অনেক সময় কাজের চাপে হয়তো নিজের বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গেও যোগাযোগের সময়টুকু পান না তিনি। তাই একটি সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করলে কিন্তু মন্দ হয় না। আর পার্টিতে নিমন্ত্রণ জানান মায়ের পছন্দের বন্ধু-বান্ধবকে। আবার পরিবারের সবাই মিলেই এই দিনটিতে একত্রিত হয়ে আসর বসিয়ে দিন। দেখবেন কেমন ভালো লাগে। মা গল্পের বই পড়তে ভালোবাসেন, তাহলে আপনার মাকে পছন্দ মত বই উপহার দিতে পারেন, তাতে তিনি কিন্তু খুব খুশি হবেন। চমকে দেওয়ার জন্য বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। শুধু আপনার একটু যত্নবান হওয়া তাতেই হবে।
সময় দিন
ব্যস্ত জীবনে সন্তানদেরও অনেক ক্ষেত্রে সুযোগ হয় না মাকে সময় দেওয়ার। তবে এই দিনটিতে মাকে একটু সময় দিন। কোথাও বেড়াতে যান বা শপিং করতে যান। তার সঙ্গে গল্প করুন। আপনার ছোটবেলার স্মৃতি, মায়ের ছোটবেলার স্মৃতি এগুলো নিয়ে আলাপ বলুন। দেখবেন, কত ভালো সময় কাটে। আর কেবল আজকের দিনটিতেই কেন, সারা বছরই মাঝেমধ্যে এই কাজগুলো করতে পারেন আপনি। মাকে নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যান। মায়ের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটান। সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিন। তাতে আপনার মা আরও বেশি খুশি হবেন। কারণ মায়েরা সময়ই প্রত্যাশা করেন। কোথাও ঘুরতে নিয়ে গেলে তাদের অনেকেই নিজেদের কিছুটা বিশেষ ভাবেন। সন্তানদের কারো সময় নেই এ অভিযোগ তো তাদের বহু পুরনোই। অন্তত এই অভিযোগটি নিয়ে এবার আপনাদের ব্যতিব্যস্ত হতে হবে না।
ঘরের কাজ
মায়েরা সাধারণত খুব গোছানো হন। ঘরের সব কাজের পরিকল্পনা তাদের আগে থেকেই মোটামুটি তৈরি করা থাকে। সেটি একটু খেয়াল করুন। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে আজকের দিনে কাজগুলো আপনারাই সেরে ফেলুন। দেখবেন, মা কীভাবে চমকে যান। বছরের প্রতিটা দিনই আপনার মা আপনাদের জন্য রান্না করে রান্না করে খাওয়ান। ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার নিজের হাতে তারা রান্না করেন। এই দিনটি নয় সন্তানরা মাকে রান্না করে খাওয়ান। এভাবে আপনার মাকে উপহার দিতে পারেন। তার পছন্দের রান্না করে আপনারা খাওয়াতে পারেন। বাড়ির কাজে মাকে আর যুক্ত হতে দেবেন না। দেখবেন আপনার মা নিজেকে বিশেষ ভাববেন। হয়তো একটু আধটু রাগ করবেন। সেটাও অন্তত মায়ের সঙ্গে সময় কাটানোর অনুষঙ্গ।
দূরে থাকলে
সন্তান দূরে থাকতেই পারে। প্রতিবার মা-ই খোঁজ নেন। এবার তাহলে ভিডিও কলে মায়ের সঙ্গে আপনি আলাপ পারুন। গল্প করুন কিছুক্ষণ। আজকাল অনলাইনেই গিফট পাঠানো যায়। কোনো একটা গিফট অর্ডার করে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে থাকুন। গিফট আসার পর হেসে মাকে চমকে দেওয়া মুখটা দেখুন। বুঝিয়ে দিন আপনি দূরে আছেন মাকে ছেড়ে কত কষ্টে, আপনি আপনার মাকে কতটা ভালোবাসেন সেই কথাগুলি আপনার মাকে আপনি চিঠিতে লিখে স্পিড পোস্ট করতে পারেন। সেই সঙ্গে মাকে সুন্দর উপহারও দিতে পারেন। উপহার থেকে আপনার অনুভূতির বহিঃপ্রকাশই মাকে বেশি খুশি করবে। মাকে নিয়ে পোস্ট করা কিংবা মাকে আপনার লেখা অনলাইন সংস্করণের চিঠিও তাকে অনেক খুশি করতে পারে। এ বিষয়গুলো ভেবে রেখেই আপনার মা দিবসের পরিকল্পনা সাজান।