‘দিনে দুটি রুটি খেয়ে বেঁচে আছে গাজার মানুষ’

Share Now..

ফিলিস্তিনকে সাড়ে ৬ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা জাপানের

দিনে দুই বেলা রুটি খেয়ে বেঁচে আছে গাজার প্রতিটি মানুষ। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা শুক্রবার এ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, অবরুদ্ধ গাজায় পানি ও খাদ্য পরিস্থিতি ভয়াবহ রকমের নাজুক। প্রতিটি মানুষই এখন মৃত্যু আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর পরিচালক টমাস হোয়াইট এক বিবৃতিতে বলেছেন, সেখানকার বাসিন্দাদের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। জাতিসংঘের মজুতকৃত ময়দা থেকে তৈরি দুই টুকরো রুটির ওপর তাদের জীবন চলছে। আর রাস্তায় দেখা যায় পানির জন্য হাহাকার। অবস্থা এমন যে, সেখানে আর কোনো জায়গাই নিরাপদ নেই। গাজার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে কূটনীতিকদের সঙ্গে এক ভিডিও ব্রিফিংয়ে থমাস হোয়াইট এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, আমরা ৮৯টি রুটির কারখানাকে সাহায্য করে আসছি। কিন্তু মানুষ এখন পানির জন্য হন্যে হয়ে ছুটছে। নিরাপদ পানি নেই বললেই চলে। জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, ছিটমহলটি এখন ‘মৃত্যু ও ধ্বংসের’ সমর্থক হয়ে উঠেছে।

গত ২১ অক্টোবর গাজায় সীমিত সাহায্যের অনুমতি দেয় ইসরায়েল। এর আগে দুই সপ্তাহে খাদ্য, পানি ও জ্বালানির অভাবে মানবেতর পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু পরিদর্শনে দীর্ঘ সময় লাগায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশে বিলম্ব হয়। কয়েক দিন আগে মধ্য গাজার একটি গুদামে হামলা চালায় ইসরায়েলি  বাহিনী। যেখানে মজুত ছিল জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সহায়তা। ডব্লিউএফপি প্রতিনিধি ও ফিলিস্তিনের কান্ট্রি ডিরেক্টর সামের আবদেলজাবের বলেন, ঘটনাটি দেখায় মানুষ ‘আশা হারাচ্ছে ও প্রতি মুহূর্তে আরো মরিয়া হয়ে উঠছে’।

এদিকে ফিলিস্তিনকে সাড়ে ৬ কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। দেশটির অর্থমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া এ ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার রাজধানী টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেওয়া ছাড়াও ইহুদি ও ফিলিস্তিনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। 

কামিকাওয়া বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনকে মানবিক সহায়তা হিসেবে ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিচ্ছি এবং আমরা আশা করব, এই অর্থ গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত বেসামরিক লোকজনের কল্যাণে ব্যয় করা হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘জাপান দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের (টু স্টেট সলিউশন) পক্ষে। আমরা মনে করি, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন যদি পরস্পরের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে না থাকতে পারে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল সম্ভব নয়।’

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গত এক মাসের অভিযান ও সহিংসতার ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে কোনো বক্তব্য দেননি জাপানের অর্থমন্ত্রী। তবে চলতি মাসেই জাপানে বিশ্বের সাত শিল্পোন্নত দেশের জোট জি-৭ সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। সেই সম্মেলনে হামাস ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক যুদ্ধ আলোচনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বা এজেন্ডা থাকবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *