দুই নৌকায় পা রেখেছেন ভাবনা

Share Now..

বর্তমান প্রজন্মের অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। ছোট পর্দায় দীর্ঘদিনের অভিনয়ের পর ২০১৭ সালে অনিমেষ আইচের ‘ভয়ংকর সুন্দর’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জনগণের তোপের মুখে পড়েছিলেন। এবার নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন ভাবনা। 

আওয়ামী লীগের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘আলো আসবেই’ নিয়ে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা তুঙ্গে। সেই গ্রুপে নিজের নাম লিখিয়েছেন এ অভিনেত্রী। সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং সাবেক সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নেতৃত্বে শোবিজ জগতের তাদেরকেই এই গ্রুপে অ্যাড করা হয় যারা মূলত আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে পরিচিত।  সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘আলো আসবেই’ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়েছে। যেখানে আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে পরিচিত অভিনয়শিল্পীদের একটি দল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমানোর জন্য নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতেন।  এদিকে সে গ্রুপে যুক্ত থাকার পরও দুই নৌকায় পা দিয়ে চলেছেন আশনা হাবিব ভাবনা। ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে ছবি এঁকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে মায়া কান্নার অভিনয় করেছেন এবং ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে যুক্ত ছিলেন বলে এমন দাবি তুলেছেন নেটিজেনরা। ভাবনার ফেসবুক প্রোফাইলে ছবি শেয়ারের বিষয়টি দেখা গেছে এবং গ্রুপে যুক্ত থাকার সত্যতা মিলেছে।

এ বিষয়ে আশনা হাবিব ভাবনার মতামত নেওয়ার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও বন্ধ দেখায় এবং হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ দিলেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফুয়াদ স্বনম নামে একজন লিখেছেন, ‘আরাফাত হাসানের বেড নায়িকা ভাবনার দুঃসাহস দেখে রাগে ফেটে পড়ছি এই মুহূর্তে। কত্তো বড় বীচ সে যে আমাদের আদর্শ আমাদের শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কাকতাড়ুয়ার কার্টুন বানায়। চলুন এর বাসা ঘেরাও করে রাস্তায় জনসম্মুখে কান ধরে উঠবস করানো দরকার নারী নামের কলঙ্ক এই বীচ ভাবনা।’

উলিউল্লাহ নামে আরেকজন তার আইডিতে লিখেছেন, ‘কি পরিমাণ মস্তিষ্ক বিকৃত ভাবা যায়! ‘আলো আসবেই’ নামক সিক্রেট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলার পরে নাটকের অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রথম শহীদ রংপুরের ‘আবু সাঈদ’ এর ব্যঙ্গ চিত্র এঁকে তার মধ্যে কাকের ছবি বসিয়ে সেটিকে শেয়ার করেন মজা নেবার জন্য। কি বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ চিন্তা করা যায়।’ জান্নাতুন নাঈম প্রীতি লিখেছেন, ‘সবচেয়ে বড়ো রসিকতাটা সম্ভবত করেছেন আশনা হাবিব ভাবনা। ইনি ছাত্র আন্দোলনের আবু সাঈদকে নিয়ে ছবি এঁকে নাকি কান্নার অভিনয় করে এই গ্রুপে দিব্যি বসে ছিলেন! শিল্পী মানেই বিবেকবোধ ঠিক থাকবে, এই ধারণা থেকে বের হয়ে আসার ক্ষেত্রে- এদেরকে ধন্যবাদ। শিল্পের নামে মানুষ হত্যা, সাধারণ ছাত্রদেরকে সন্ত্রাসী ট্যাগ দেয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন শিল্পীরা ভূমিকা রেখেছে সেটা আমাদের জানা থাকলো। যে ছাত্ররা পা হারিয়েছে, বুকে আর মাথায় গুলি খেয়েছে- তারাও জেনে রাখুক সব শিল্পীরই বিবেক বোধ নাই, এবং সব বিবেক বোধ ওয়ালা মানুষ শিল্পী হওয়ার আগে- মানুষ।’

উল্লেখ্য, গ্রুপে সদস্যদের তালিকায় আরও যারা ছিলেন- সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, অরুণা বিশ্বাস, ফেরদৌস ছাড়াও ছিলেন রিয়াজ আহমেদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, শামীমা তুষ্টি, জামশেদ শামীম, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সাজু খাদেম, হৃদি হক, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, লিয়াকত আলী লাকী, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচী, রওনক হাসান, আহসানুল হক মিনু, গুলজার, এস এ হক অলীকসহ আরও অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *