দুবাইয়ে জলবায়ু সম্মেলনে ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি

Share Now..

জাতিসংঘের জলবায়ু সম্পর্কিত বাৎসরিক সম্মেলন কপ-এর ২৮তম আসরে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা এই চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। তবে সমালোচনাও চলছে।

জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপের এবারে আসর বসেছিল আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। সেখানে সম্মেলনের শেষ দিনে ‘ট্রানজিশন অ্যাওয়ে’ চুক্তি সইয়ে একমত হয়েছেন প্রায় দুইশ দেশের প্রতিনিধিরা। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসাই এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য।

এই চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখ করেছে আয়োজক দেশ আরব আমিরাতের শিল্প ও প্রযুক্তি মন্ত্রী এবং কপ ২৮-এর সভাপতি সুলতান আল-জাবের।

এর আগে গ্লাসগো ও শার্ম আল শেখে কপের আসরে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার জন্য ‘ফেজ আউট’ ও ‘ফেজ ডাউন’ শব্দগুলো ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক হয়। এই সম্মেলনে সেই বিতর্ক এড়াতে ‘ট্রানজিশন অ্যাওয়ে’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।

চুক্তিকে সাধুবাদ জানিয়েছে অনেক দেশ। বিশেষ করে জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় উৎপাদক দেশগুলোর অন্যতম সৌদি আরব স্বাগত জানিয়েছে। তবে এর সমালোচনাও করছেন অনেকে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বেশি ঝুঁকিতে থাকা গরিব দেশগুলোর মধ্যে এই চুক্তি নিয়ে শঙ্কা আছে। যেমন, সম্মেলনে পলিনেশীয় দেশ সামোয়া বলেছে, তারা প্রতিবাদ জানাবার জন্য পর্যাপ্ত সময় পায়নি।

বিশ্লেষকরাও তাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্যানের গ্লোবাল পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজির প্রধান হারজিৎ সিং ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, এ চুক্তির মধ্য দিয়ে অবশেষে জলবায়ু সংকটের মূল হোতা জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আলো পড়েছে।

‘কয়লা, জ্বালানি তেল ও গ্যাস থেকে সরে আসার জন্য একটা দিকনির্দেশনা বহুদিন আগেই দরকার ছিল,’ বলেন তিনি। তবে চুক্তিতে অনেক ফাঁক রয়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি।

হারজিৎ বলেন, ‘এর মধ্যে অনেকগুলো ফাঁক রয়েছে, যা দিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পগুলো বেরিয়ে যেতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের কপটতা বেরিয়ে এসেছে, যারা জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বাড়িয়ে চলেছে, অথচ তারা সবুজ পরিবর্তনে খুবই কম বিনিয়োগ করছে। আর উন্নয়নশীল দেশগুলো— যারা উৎপাদন, আয়, কর্মসংস্থান এসবের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল- তাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের জন্য জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা জরুরি।’

তবে বাংলাদেশের মত জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো অবশ্য অভিযোজনের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এ বিষয়ে সম্মেলনে বাংলাদেশের দূত সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘অভিযোজন হলো জীবন-মরণের ব্যাপার। আমরা অভিযোজনে কোন আপস করতে পারি না। আমরা জীবন ও জীবিকার বিষয়ে আপস করতে পারি না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *