ধরা পড়ার পরও ১২ বছর ধরে জাল এনটিআরসিএ সনদে চাকরী এক স্কুল শিক্ষিকার!

Share Now..

\ স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ \
ধরা পড়ার পরও জাল সনদে চাকরী করার অভিযোগ উঠেছে গুলশান আরা খাতুন নামে এক স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। তিনি ১২ বছর ধরে হরিণাকুন্ডু উপজেলার কাপাশাহাটিয়া ইউনিয়নের ঘোড়াগাছা লাল মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে সরকারী বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন। এ ক্ষেত্রে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাসহ সংশ্লিষ্টরা এই অপকর্মের সহায়ত করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। গুলশান আরা খাতুন হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত আমজাদ আলী বিশ্বাসের মেয়ে। হরিণাকুন্ডু উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গুলশান আরা খাতুন গত ২৩ জুলাই ২০১১ সালে জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে ঘোড়াগাছা লাল মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক নজির উদ্দীন আহমেদের যোগসাজসে সহকারী শিক্ষিকা পদে যোগদান করেন। ২০১২ সালের ১ নভেম্বর তিনি এমপিও ভুক্ত হন। জাল নিবন্ধন সনদের বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) যাচাই-বাছাই করে ভুয়া বলে প্রমানিত হয়। এক চিঠিতে তাকে সরকারি বেতন ভাতা চালানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করার কথা বলা হয়। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে তিনি চাকরী করে যান। ২০১৬ সালে মন্ত্রনালয়ের নিয়মিত অডিটে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে চাপ প্রয়োগ করে এই মর্মে অডিট রিপোর্ট প্রেরণ করে তাতে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষিকা গ্রহণকৃত ৩ মাসের বেতন ভাতাদি সরকারী কোষাগারে জমা করেছেন এবং বর্তমানে তিনি উক্ত স্কুলে কর্মরত নাই। এদিকে সর্বশেষ মন্ত্রনায়লের অডিট রিপোর্ট পর্যালচনা করে দেখা যায় তাতে সহকারী শিক্ষিকা গুলশান আরা খাতুনের নাম নেই। অথচ তিনি এখনো বহাল তবিয়তে চাকরী করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে স্কুলটির বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী খাতুন জানান, তৎকালীন স্কুল কমিটির সভাপতি মশিয়ার রহমান জোয়ার্দার মানবিক দিক বিবেচনা করে পুনরায় নিয়োগ দেন। কিন্তু সেটি ছিল সম্পূর্ণ অবৈধ। এর বাইরে প্রধান শিক্ষিকা কিছু বলতে রাজি হননি। নিয়োগে না পেয়েই জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারী বেতনভাতা গ্রহণের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাগজ সব ঠিক আছে। বেশি কিছু জানতে চাইলে সে সময়কার সভাপতি মশিয়ার জোর্য়াদের কাছে জানেন। আমি কিছু বলতে পারবো না। এ বিষয়ে স্কুলটির সাবেক সভাপতি মশিয়ার রহমান জোয়ারদার জানান, আমার সময়ে আমি কোন বে-আইনি কাজ করিনি। আমি জানি কোনটা নিয়ম, আর কোনটা অনিয়ম। আমার মনে হয় নিয়ম মেনেই সহকারী শিক্ষিকা গুলশান আরাকে নিয়োগ দিয়েছি। এ বিষয়ে স্কুলটির বর্তমান সভাপতি ও কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরাফত দৌলা ঝন্টু জানান, যদি কোন অনিয়ম থেকে থাকে তাহলে আইনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন শিক্ষা অফিসে গিয়ে বিষয়টি যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। হরিণাকুন্ডু উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারী জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে পুনরায় নিয়োগ না হলে যদি তিনি চাকরীতে বহাল থাকেন, তাহলে বিষয়টি অবশ্যই কঠোর হাতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, এখন তো অনলাইনের যুগ। জাল এনটিআরসিএ সনদ দিয়ে চাকরী করার কোন সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *