নতুন আন্তর্জাতিক প্রণালীর ডাক দিলেন জার্মান চ্যান্সেলর
জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস ডাভোসে তার ভাষণে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বায়নের নতুন রূপের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে সমালোচনা বেড়ে চলেছে।
শামুকের পিঠে লাগানো একটি বুলেট – বেশ কয়েকদিন ধরে এমন একটি ছবি টুইটারে দেখা যাচ্ছে। জার্মানি ইউক্রেনকে যে গতিতে অস্ত্র ও সামরিক সাহায্য দিচ্ছে, তার প্রতি ব্যঙ্গ হিসেবে ছবিটি শেয়ার করেছেন বার্লিনে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রি মেলনিক। অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বাস্তবে জার্মানির সামরিক সহায়তা যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যত পৌঁছাচ্ছেই না বলে ইউক্রেন বার বার ক্ষোভ প্রকাশ করছে। ফলে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।
বৃহস্পতিবার ডাভোসে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামে ভাষণ দিতে গিয়ে শলৎস বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ইউক্রেন যুদ্ধে কখনোই জয়ী হবেন না। শলৎসের মতে, পুটিন ইতোমধ্যেই তাঁর সব কৌশলগত লক্ষ্য পূরণ করতে বিফল হয়েছেন। যুদ্ধের সূচনার সময়ে রাশিয়া গোটা ইউক্রেন জবরদখল করার যে লক্ষ্য স্থির করেছিল, আজ তা দূর অস্ত। বরং ইউক্রেন ভবিষ্যতে ইউরোপের মধ্যে নিজস্ব স্থান আরও পাকাপোক্ত করেছে। রাশিয়ার যুদ্ধের নৃশংসতা ইউক্রেনকে আরও ঐক্যবদ্ধ করে তুলেছে বলে জার্মান চ্যান্সেলর মনে করেন। সেইসঙ্গে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোয় যোগ দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। শুধু ন্যাটো নয়, পুটিন জি-সেভেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্য ও শক্তিও আন্দাজ করতে পারেননি বলে শলৎস মনে করেন। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস বিশ্বায়নের নতুন রূপের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর মতে, শুধু রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেনের অস্তিত্ব বিপন্ন হয় নি, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রণালীও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এই অবস্থায় এমন এক প্রণালীর প্রয়োজন, যা ক্ষমতাকে আইনের অধীনে সীমাবদ্ধ রাখবে, হিংসা নিষিদ্ধ করবে এবং স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির গ্যারেন্টি দেবে। ডাভোসে শলৎসের ভাষণ সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেছেন বার্লিনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত মেলনিক। জার্মানির ‘বিল্ড’ সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, জার্মান সরকার ইউক্রেনকে যুদ্ধ জয়ের জন্য সহায়তা করতে ঠিক কোন স্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, কিয়েভ শলৎসের ভাষণে সে কথা শোনার আশা করছিল। বিশেষ করে অবিলম্বে ভারি অস্ত্র সরবরাহের কোনো উল্লেখ করেন নি জার্মান চ্যান্সেলর। মেলনিক সরাসরি শলৎসের নেতৃত্বের ক্ষমতা ও সাহস নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এমনকি শলৎস ইইউ-র প্রার্থী হিসেবেও ইউক্রেনকে স্পষ্ট সমর্থন জানান নি।