‘নারীদের মানসিক অসুস্থতার হার বেশি’

Share Now..

সাধারণভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, নারীদের চেয়ে পুরুষদের মধ্যে মানসিক রোগীর হার বেশি; কিন্তু আমাদের সমাজে পুরুষদের মানসিক অসুস্থতা যেভাবে প্রদর্শিত হয়, নারীদের ক্ষেত্রে তেমনটি প্রকাশিত হয় না। যুক্তরাজ্যের অ্যাঙ্গলিয়া রাসকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের করপোরেট সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ক্লাইভ বডি সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই দাবি করেছেন।

এই মনোবিদ ও গবেষক তার গবেষণা প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘সাধারণভাবে মনে করা হয় যে, মানসিক রোগীদের হার পুরুষদের মধ্যে অনেক বেশি এবং এক্ষেত্রে পুরুষ এবং নারীদের অনুপাত ৬ : ১। অর্থাৎ প্রতি ছয় জন পুরুষ মানসিক রোগীর বিপরীতে একজন নারী মানসিক রোগী দেখা যায়। কিন্তু বাস্তব বা প্রকৃত চিত্র হলো সমাজে পুরুষ এবং নারী মানসিক রোগী, বিশেষ করে সাইকোপ্যাথ জাতীয় মানসিক রোগীর অনুপাত প্রায় সমান। অর্থাত্ প্রকৃত অর্থে এই অনুপাত ২ : ১ কিংবা ১ : ১।’

গবেষণাপত্রে ড. ক্লাইভ বলেন, ‘কপটতা, প্রতারণা, বিরোধী মনোভাব, সহানুভূতির অভাব, অগভীর আবেগ এসব কিছু নেতিবাচক মানসিক বৈশিষ্ট্যের নাম। যারা সাইকোপ্যাথ, তাদের ক্ষেত্রে এসব বৈশিষ্ট্যের অতিমাত্রার উপস্থিতি দেখা যায়। এছাড়া একজন সাইকোপ্যাথ জাতীয় রোগীর বেলায় আরো যেসব বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, সেগুলো হলো সহমর্মিতা বা অপরাধবোধের গুরুতর অভাব, বারবার মিথ্যে বলা, নিষ্ঠুরতা, আত্মপ্রেম এবং জাল-জালিয়াতির প্রতি ঝোঁক। সাইকোপ্যাথরা সব সময়ই অর্থ, ক্ষমতার পেছনে ছোটে, তাদের মধ্যে অন্যকে নিয়ন্ত্রণ করার ইচ্ছেও প্রবল থাকে।’ কিন্তু, এমন অনেক আচরণ, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে সাইকোপ্যাথ রোগীদের পাথমিক ও প্রধান উপসর্গ হিসেবে গণ্য করা হয়, সেগুলোকে আমাদের সমাজের প্রচলিত মূল্যবোধ এবং কাঠামোতে পুরুষালি আচরণ হিসেবে দেখা হয়। ফলে কোনো নারী যদি সেসব আচরণ করে, আমরা হয়তো তার প্রতি ক্ষুব্ধ হই। কিন্তু এটা আমাদের কখনো মনে হয় না যে, এসব আচরণ সাইকোপ্যাথ রোগীর উপসর্গ।

তাছাড়া পুরুষ সাইকোপ্যাথদের মধ্যে শারীরিক সহিংসতা জড়ানোর প্রবণতা বেশি থাকে, অন্যদিকে নারী সাইকোপ্যাথদের অধিকাংশ মৌখিক সংহিসতার অর্থাত্ গালাগালি, অপমান ইত্যাদির মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেন। তাদের রোগটি যে প্রায় সব সময় আড়ালে থেকে যায়, এটিও তার একটি কারণ।’ কোনো মানসিক রোগী সাইকোপ্যাথ কি-না, তা নির্ধারণে মনোবিজ্ঞানে যেসব পরীক্ষার উল্লেখ রয়েছে, সেখানেও পুরুষকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছেন ড. ক্লাইভ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *