নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আইন নয়, মানসিকতার পরিবর্তনই নারীর ওপর সহিংসতা প্রতিরোধ করতে পারে।’
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ‘বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন’ এবং ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টা আমাদের জন্য পীড়াদায়ক তা হচ্ছে নারীর প্রতি সহিংসতা। নারী নির্যাতন, ধর্ষণ ও পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে আইন করেছি। কিন্তু, শুধু আইন করলেই এসব বন্ধ করা যাবে না, এ জন্য মানসিকতাও বদলাতে হবে। চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন আনতে হবে এবং বিশ্বাসটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিনিস।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই বিশ্বাসটা করতে হবে যে, নারীরা কেবল ভোগের বস্তু নয়, নারীরা সহযোদ্ধা। তারা সহযোগী, সহযাত্রায় চলতে হবে, সমান অধিকার দিতে হবে-এটা হচ্ছে বাস্তবতা। সেভাবেই কাজ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ শিক্ষায়-দীক্ষায় কর্মসংস্থানে নারী-পুরুষ সমানভাবে কাজ করতে পারছে বলেই তার সরকার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেই ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে অবশ্যই আমাদের দেশের নারী সমাজকে জাগ্রত করতে হবে।’
কেননা, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী যেখানে নারী কাজেই তাদের পেছনে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটা জাতির পিতা যেমন মনে করতেন তেমনি বেগম রোকেয়াও তার লেখায় বলে গেছেন।
নারীদের বেশি লেখাপড়া শিখিয়ে কী হবে তারাতো পরের ঘরে চলে যাবে-এ ধরনের মানসিকতা আমাদের সমাজে বিদ্যমান ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে কারণেই জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার সরকার নারীদের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত করার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম স্বাগত বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে আজকের দিনটি তার কন্যা এবং বাংলাদেশের অটিজম আন্দোলনের অগ্রপথিক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জন্মদিন উল্লেখ করে সকলের কাছে তার জন্য দোয়া চান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘পুতুলের ব্যক্তিগত উদ্যোগেই আজ অটিজম আক্রান্তরা সমাজের মূলধারার সঙ্গে মিশে যেতে পারছে, স্বীকৃতি পেয়েছে। অটিজম শিশুদের কোন মা-বাবাই লোক লজ্জার ভয়ে এখন আর লুকিয়ে রাখেন না। সেই মানসিকতারও পরিবর্তন এসেছে।’