পাকিস্তানে কলেজ ক্যাম্পাসে ধর্ষণের অভিযোগ, বিক্ষোভ-সংঘর্ষে আহত ২৭
পাকিস্তানের লাহোরে কলেজ ক্যাম্পাসে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে সোমবার (১৪ অক্টোবর) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলাকালে কলেজের নিরাপত্তাকর্মী পরে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ২৭ জন আহত হয়েছেন বলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এর খবরে বলা হয়েছে।
এই ধর্ষণের অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর গতকাল রোববার (১৩ অক্টোবর) এ ঘটনায় এক নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের তথ্যমতে, সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। পুলিশ জানায়, এ ঘটনার এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়নি, কারণ ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যরা কেউ সামনে আসতে চাইছেন না।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক হয়ে সোমবার শহরের বিভিন্ন কলেজের বাইরে বিক্ষোভের আয়োজন করেন। এর মধ্যে হাফিজ সেন্টার পাঞ্জাব কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা দলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এসব সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন। রেসকিউ ১১২২–এর দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, হাফিজ সেন্টার পাঞ্জাব কলেজ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে ২৭ জন আহত হন। উদ্ধারকারী ব্যক্তিরা আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে। একজন শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত অবস্থায় সার্ভিসেস হাসপাতাল লাহোরে পাঠানো হয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (অপারেশনস) ফয়সাল কামরান বলেন, পুলিশ ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে, যাতে তদন্তটা চালানো যায়। সব হাসপাতালের রেকর্ড ও কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে দেখা হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের কোনো ঘটনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ফয়সাল বলেন, শিক্ষার্থীরা কলেজের অধ্যক্ষকে হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। মডেল টাউনের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট (এসপি) ও সহকারী এসপি অধ্যক্ষকে সরিয়ে নিয়ে এসেছেন। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের ছোড়া পাথরের আঘাতে কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
পাঞ্জাবের শিক্ষামন্ত্রী রানা সিকান্দার হায়াত পাঞ্জাব কলেজে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে অধ্যক্ষ ও কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এটি করতে গিয়ে যদি কলেজটিকে সিলগালা করতে হয় এবং রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে হয়, তাতেও কোনো ধরনের দ্বিধা করা হবে না।
শিক্ষামন্ত্রী বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি পুলিশকে শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা না করতে নির্দেশ দেন।