পুলিশের সঙ্গে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

Share Now..


রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ফল জালিয়াতি, ভোট দিতে না পারাসহ বিভিন্ন অভিযোগে একের পর এক বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করছেন পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা। এদিকে নির্বাচন পরবর্তী নানা ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নগরীর বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে নগরীর শাপলা চত্বরে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহাবুব মোর্শেদ শামীমের পক্ষে তার কর্মী-সমর্থকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করতে যায়। এ সময় তারা গাড়ি বহরসহ মিছিল নিয়ে শাপলা চত্বরে পৌঁছলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বিক্ষুব্ধরা বাধা পেরিয়ে সামনে যেতে চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা না করা, ইভিএম জটিলতার কারণে ভোট দিতে না পারা ও ইভিএমে সুক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে। এসব বিষয় তুলে ধরে তারা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ জানাতে বিক্ষোভ নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের পথরোধ করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এবার ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন শাহাদৎ হোসেন। শামীম গত মেয়াদে কাউন্সিলর ছিলেন। এ বিষয়ে শাপলা চত্বরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পুলিশের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএমের কারণে ভোট গ্রহণে নানা জটিলতা ও বিপুল সংখ্যক ভোটার ভোট দিতে না পারার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে ভোটাররা। দুপুরে নগরীর ৪, ২০, ২৬, ৩২ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নারী ও পুরুষ ভোটাররা নগরীতে বিক্ষভ মিছিল করেছে। নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটাররা নির্বাচন কমিশনের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী খোরশেদ আলম খোকনের সমর্থকরা শাপলা চত্বরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা প্রদান করেছে ।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, ইভিএমের কারণে ভোট দিতে না পারায় তাদের সমর্থকরা ভোট না দিয়ে ফিরে গেছেন ফলে তাদের প্রতিপক্ষ বিজয়ী হয়েছেন।

অন্যদিকে ২০ নম্বর ওয়ার্ডে দুপুরে মানববন্ধন করেছেন পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী বহুলুল ইসলাম জেপলিনের সমর্থকরা। এর আগে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শাহাজাদা আরমান সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানান। এ ওয়ার্ডেরর কাউন্সিলর প্রার্থী এম এ রাজ্জাক মন্ডলকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তিনি এখন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া ভোটের দিন ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিজিবির গাড়িতে আগুন লাগানো ও সেখানে নির্বাচিত কাউন্সিলর হারাধন রায়কে গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী একরামুল হকের পক্ষে তার লোকজন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন।

গত মঙ্গলবার সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মেয়র পদে ৯ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে যেকোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন। নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ দায়েরে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যেকোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কেউ এ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।

ইসির আইন শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুছ সালাম জানিয়েছেন, রংপুর সদর সিনিয়র জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী জজকে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে নির্বাচনি আপিল ট্রাইব্যুনাল। আইন অনুযায়ী, ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করতে হবে। ট্রাইব্যুনাল সে অভিযোগ নিষ্পত্তি করবেন পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে। সেখানে সুবিচার না পেয়ে থাকলে নির্বাচনি আপিল ট্রাইব্যুনালে যাওয়া যাবে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের ৩০ দিনের মধ্যে। আপিল ট্রাইব্যুনাল সে অভিযোগ নিষ্পত্তি করবেন পরবর্তী ১২০ দিনের মধ্যে।

One thought on “পুলিশের সঙ্গে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *