প্রবাসির স্ত্রীর বিরুদ্ধে এবার সুদখোর রফি’র ৫৪ লাখ টাকার মামলা পুলিশ তদন্তে উঠে এসেছে ব্লাঙ্ক চেক জমা নিয়ে মামলা করার কাহিনী

Share Now..

\ স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ \
ঝিনাইদহের আলোচিত সুদ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ওরফে রফি’র হাত থেকে এবার তার নিজ অফিসের ফিল্ড অফিসার আকলিমা বেগমও রেহায় পাননি। চাকরী গ্রহণের সময় রফির এনজিও অফিসে জমা নেওয়া ৬টি বøাঙ্ক চেকে ইচ্ছামতো টাকার অংক বসিয়ে আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে করেছেন মামলা। এই মামলায় আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত সমনন জারি করেছেন। এদিকে মামলার আগেই আকলিমা বেগম দিয়া এনজিওতে জমা চেক ও টাকা ফেরৎ পাওয়ার জন্য ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারের দপ্তরে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তের জন্য গত ২৪ জানুয়ারি ১৩/পি নং স্মারকে ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে দায়িত্ব দেন। পুলিশী তদন্তে উল্লেখ করা হয়, ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার কর্নেল রহমান সড়কের প্রবাসি মন্টু মিয়ার স্ত্রী আকলিমা বেগম ২০১৭ সালে সুদখোর রফির ‘দিয়া’ নামের এনজিও তে চাকরী নেন। চাকরী গ্রহণের সময় আকলিমা নগদ অর্থসহ মোট ৬টি বøাঙ্ক চেক জমা দেন ডিজ এ্যাবিলিটি ইনকুইজিশন এ্যাকটিভিটিজ (দিয়া) সংস্থায়। সরজমিন, গোপন ও প্রকাশ্যে তদন্ত করেন এসআই জাহাঙ্গীর। উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনে তিনি নোটিশ জারী করেন। নোটিশ পাওয়ার পর ভুক্তভোগী আকলিমা বেগম থানায় হাজির হলেও বিবাদী রফিকুল ইসলাম রফি আসেননি। পুলিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গ্রহণের সময় জামানত হিসাবে আকলিমা ডাচ বাংলা ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার হিসাব নং-২২৮১৫১০০৬২৩৩০ এর দুইটি খালি চেক সুদখোর রফি জমা রাখে। ২০২০ সালে পল্লীমঙ্গল সংস্থা থেকে ঋণ গ্রহণের সময় আকলিমাকে গ্রান্টার হিসাবে উপস্থাপন করে আরো দুইটি চেক নেয় রফি। ২০২১ সালে এনজিও মালিক রফি এমআরএ লাইসেন্স করার জন্য আকলিমার কাছ থেকে নগত এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ধার নেন। ২০২২ সালে প্রতারক রফি আকলিমাকে বলেন এখন থেকে আপনার বেতন জনতা ব্যাংকে হবে। সে জন্য জনতা ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হবে। রফির সরল কথায় বিশ^াস করে আকলিমা বেগম জনতা ব্যাংক বিষয়খালী বাজার শাখায় ০১০০২২৭৫৩৬০৬৮ নাম্বারের একাউন্ট খোলেন। এ সময় জনতা ব্যাংকের এসবি-৬০০৫২৯০২৪০১ ও এসবি-৬০০৫২৯০২৪০২ নাম্বারের দুইটি চেকের পাতা কৌশলে রেখে দেন। ২০২২ সালের আগষ্ট মাসে আকলিমা বেগম দিয়া এনজিও থেকে চাকরীর ইস্তফা দিয়ে বাড়ি চলে আসেন। চাকরি ছাড়ার আকলিমা তার দেওয়া ধারের টাকা ও জামানত হিসাবে দেওয়া ৬টি চেকের পাতা ফেরৎ দিতে চাইলে তিনি একের পর এক ঘুরাইতে থাকেন। গত ৪ ফেব্রয়ারি ৭৭৮ নং স্মারকে জমা দেওয়া পুলিশ তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে, কেসমত গড়িয়ালা গ্রামের কেসমত আলী মাষ্টারের ছেলে রফিকুল ইসলাম রফি একজন প্রতারক। অসহায় নারীদের ক্ষুদ্র ঋন দেওয়ার নামে খালি চেক জমা নিয়ে পরবর্তীতে মোটা অংকের টাকা বসিয়ে মহিলাদের নামে মামলা করে। রফির এমন কর্মকান্ডে বিষয়খালী বাজারে মহিলারা ঝাড়– মিছিল পর্যন্ত করেছে বলেও পুলিশ কর্তকর্তা তার প্রতিবদনে উল্লেখ করেন। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর আলম তদন্তকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম মিয়া, এলঅকার ইউপি সদস্য ও বিষয়খালী বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পান। এদিকে দিয়া এনজিওর হিসাব রক্ষক সাক্ষরিত এক নোটসীটে আকলিমা বেগম সংস্থাটির কাছে এক লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা পাবেন বলে উল্লেখ করেন। এই টাকা ও ৬টি বøাঙ্ক চেক না দিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আকলিমা বেগম রোববার বিকালে মুঠোফোনে কান্না বিজড়িত কন্ঠে জানান, তিনি একজন সাধারণ নারী। সন্তান নিয়ে পথে পথে ঘুরছেন। সুবিচারের আশায় ঝিনাইদহ সদর থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ সঠিক তদন্তের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬০ ধারা মতে উভয়ের ডাকেন। কিন্তু রফি হাজির না হয়ে উল্টো তার ম্যানেজার সোহরাব হোসেনের দিয়ে প্রথমে উকিল নোটিশ ও পরে মিথ্যা ও হয়রানী মুলক মামলা করেছেন। বক্তব্য জানতে দিয়া এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম রফির মুঠোফোন একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

8 thoughts on “প্রবাসির স্ত্রীর বিরুদ্ধে এবার সুদখোর রফি’র ৫৪ লাখ টাকার মামলা পুলিশ তদন্তে উঠে এসেছে ব্লাঙ্ক চেক জমা নিয়ে মামলা করার কাহিনী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *