ফুটবল ভাবনায় মধ্যপ্রাচ্য

Share Now..

আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের জন্য আরও একটি নতুন পথ সংযুক্ত হয়েছে। পুরনো পথ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। সংযুক্ত হওয়া ফুটবলে নতুন পথ মধ্যপ্রাচ্য। দেশের ফুটবল এখন মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত হচ্ছে।

চলতি বছর সেপ্টেম্বরে ভারতে হওয়া সাফে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত ও লেবানন খেলেছে। বিশ্বকাপের বাছাইয়েও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ রয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ভালো খেলেছে। সাফে লেবাননের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারলেও ভালো খেলেছে। সেমিফাইনালে কুয়েতের বিক্ষে ১-০ গোলে হারলেও সেই ম্যাচেও লড়াই হয়েছে। দেশের অতীত ফুটবলেও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে খেলতে হয়েছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। ঘন ঘনই দেখা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের ফুটবলের সঙ্গে বাংলাদেশের ফুটবলের দেখা হওয়ার সূত্র তৈরি হচ্ছে। আগামী বছরটা এশিয়ান কাপ ও বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোই হবে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ।

যতক্ষণ পর্যন্ত পুরোপুরি বিদায় না নিচ্ছে, তার আগ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। এই মঞ্চে এখন ফুটবল দর্শকের আগ্রহ বাড়ছে। দেশের ফুটবল দর্শক খুশি হয়েছে মঙ্গলবার লেবাননের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র হওয়ায়। গোল হজম করে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ গোল শোধ করেছে। শুধু তাই নয়, ম্যাচ জেতার মতো গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ না হলে রেজাল্ট অন্যরকমও হতে পারত। বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করেই লড়াই করতে দেখে দর্শক প্রশংসা করেছে।

মধ্যপ্রাচ্যের ফুটবল দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশের ভাবনা তৈরি হয়েছে। ঘুরেফিরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এখন বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের ফুটবল দেশ এখন সাফের পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে। লেবাননের ক্রোয়েশীয় কোচ জানান, এখন আর চাইলেই বাংলাদেশকে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।

একদিকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের ফুটবলও বাংলাদেশের সামনে প্রতিপক্ষ হচ্ছে। দেশের ফুটবলের জন্য সম্ভাবনার পথ খুলছে। অস্ট্রেলিয়া একবার বাংলাদেশে প্রতিপক্ষ ছিল। আবার তারা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে। ভবিষ্যতেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বিশ্বকাপের বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হবে। এসব নিয়ে কী ভাবছে বাফুফে? বাফুফের সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি কোচিং স্টাফদের নিয়ে বসবেন। আগামী ৪ বছর কী পরিকল্পনা করা যায়, তা নিয়ে কথা বলবেন। বিশেষ করে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের গ্রুপ পর্বের খেলাগুলো আরো ভালোভাবে খেলা যায় কীভাবে, সেটা নিয়েই তার পরিকল্পনা।

১৬ নভেম্বর মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচ খেলেছে। ৭-০ গোলে হারলেও বাংলাদেশের এই হারের ব্যবধান কীভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা করতে চায় বাফুফে। লেবানন ও ফিলিস্তিনের বিপক্ষে আরও ভালো ফুটবল উপহার দেওয়ার কথা ভাবছে বাফুফে।

আগামী ৪ বছরে দেশের ফুটবল কোথায় যাবে, তা নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সামনে কারা দায়িত্ব পালন করবেন, তার ওপর নির্ভর করছে। তবে আমি চাই একটা ভালো জায়গায় তুলে নিয়ে আসতে।’ সাফে কুয়েত ও লেবানানকে নেওয়ায় বাংলাদেশের ফুটবল দর্শক হতাশ হয়েছিল। ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে মনে করে কথা শুনিয়েছিলেন সালাহউদ্দিনকে। তিনি বলেন, ‘আমাকে অনেকেই সমালোচনা করেছিল। আমি দেখেশুনেই মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশকে সাফে অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম। আমার দেশের ফুটবলের জন্য এটা ভালো হয়েছে। তার ফল এখন দেখছি, বাংলাদেশ ভালো খেলছে। আরো ভালো খেলবে আমার বিশ্বাস।’

ফিফার উইনডো আসছে। কীভাবে সেগুলো কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে কোচ ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসবেন বলে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি।

বাংলাদেশ এখন সাফে খেলছে। এই সাফে ২০০৩ সালের পর এখনও ট্রফি পায়নি। ২০০৫ সালের পর এখনও ফাইনাল খেলেনি। তার পরও গত বারের সাফে বাংলাদেশের খেলা দর্শক পছন্দ করেছে। এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিপক্ষেও বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই করছে। আশা জাগানিয়া এমন পারফরম্যান্স আরও উন্নত করা যায় কীভাবে- তা নিয়েই তৈরি হবে দেশের ফুটবলের আগামীর পথ। কারণ ফিফা যেভাবে নতুন নিয়ম করছে, তাতে অনুমান করাই যায় ২০৩০ বিশ্বকাপ বাছাইয়েও বাংলাদেশকে অস্ট্রেলিয়ার মতো এশিয়ার শক্তিশালী দেশগুলোর বিপক্ষে লড়াই করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *