ফের উত্তপ্ত মণিপুর, নিহত ৪
নতুন বছরের শুরুতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর। রাজ্যটিতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে অন্তত চার জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো বেশ কয়েক জন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার জেরে মণিপুরের পাঁচ জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং মন্ত্রীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন বছরের প্রথম দিন সোমবার মণিপুরে নতুন করে সহিংসতায় চার জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এবং আরো বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। পরে রাজ্যের পাঁচটি জেলায় কারফিউ জারি করা হয়। থাউবাল জেলার স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, একদল পুরুষ চাঁদাবাজির জন্য স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে সেখানে আসে। যদিও তাদের এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে হামলার ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বন্দুকধারীদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছেন, দলটি বন্দুক নিয়ে এখানে এসেছিল এবং একজন লোকের সঙ্গে কথা বলার সময়—যাকে তারা চেনে বলে মনে হয়—মারামারি শুরু হয়। একপর্যায়ে তারা সবাইকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে।
এদিকে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ভিডিও বার্তায় সহিংসতার নিন্দা করে জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নিরপরাধ মানুষকে হত্যার ঘটনায় আমি আমার অপরিসীম দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা অপরাধীদের ধরতে পুলিশের দলগুলোকে একত্রিত করেছি। আমি হাত জোড় করে লিলং (যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে) বাসিন্দাদের কাছে অপরাধীদের খুঁজে বের করতে সরকারকে সাহায্য করার জন্য আবেদন করছি। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—সরকার আইনের অধীনে ন্যায়বিচার দেওয়ার জন্য তার ক্ষমতার সব কিছু করবে। কাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকও করেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। নতুন করে হওয়া এই সহিংসতার পরে থাউবাল, ইম্ফল পূর্ব ও ইম্ফল পশ্চিম, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর জেলায় পুনরায় কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান। দুই দিন আগে মণিপুরের সীমান্ত শহর মোরেহতে সন্দেহভাজন বিদ্রোহী এবং পুলিশ কমান্ডোদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর চার সদস্য আহত হন। বিদ্রোহীরা বেশ কয়েকটি আরপিজি নিক্ষেপ করে যা মোরেহের তুরেলওয়াংমা লেইকাইয়ের সিডিও ফাঁড়ি ভবনের ভেতরে বিস্ফোরিত হয়। আর সেখানেই কমান্ডোরা অবস্থান করছিলেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মণিপুরে গত বছরের মে মাসে ভয়াবহ জাতিগত সংঘাত শুরু হয়। এরপর থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটি বছরের বেশির ভাগ সময় ধরেই সংবাদের শিরোনামে ছিল। সংঘাতে রাজ্যটিতে ১৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং ঘরবাড়ি হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ।