ফ্রান্স দলে বিভক্তি, এমবাপ্পের ইগো এবং মাঠে পাল্টাপাল্টি অপমান

Share Now..

সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে এবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ২য় রাউন্ড থেকেই বাদ পড়তে হয়েছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে। অথচ আসরের শুরুতে হট ফেবারিট ছিলো তারা। দলও তারকায় ভরা। তারপরও দলের মধ্যে বিভক্তি আর খেলোয়াড়দের বাজে স্বভাবের কারণেই দলকে এত তাড়াতাড়ি বিদায় নিতে হয়েছে বলে মনে করছেন ইউরোপিয়ান ফুটবল বিশ্লেষকরা।

ফ্রান্সের দ্রুত বাড়ি ফেরার পর দলটিকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। চুলচেরা বিশ্লেষন হচ্ছে তাদের পারফরম্যান্সের। খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে তাদের ব্যর্থতার কারণ। এরইমধ্যে ফরাসী পত্রিকাগুলো তুলে ধরেছে দলটির অভ্যন্তরের নানা কাহিনী।

সুইসদের বিপক্ষে ম্যাচের সময়ই শুরু হয় নানা বিতর্ক। টাইব্রেকারে এমবাপ্পের পেনাল্টি মিসের খেসারত দিতে হয় পুরো দলকে। আর এ ঘটনা মেনে নিতে পারেন নি দলের আরেক তারকা ফুটবলার আদ্রিয়েন র‌্যাবিয়টের মা। এমবাপ্পের পরিবারকে মাঠের মধ্যেই কথা শুনিয়ে দেন তিনি। পরবর্তীতে পল পগবার পরিবারের সঙ্গেও ঝামেলায় জড়ান তিনি।

স্থানীয় একটি পত্রিকার খবর অনুযায়ী, ফ্রান্স জাতীয় দলে একতার অভাব স্পষ্ট। ঘটনার সূত্রপাত ইউরোর আগে। বুলগেরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ফরোয়ার্ড অলিভিয়ের জিরু অভিযোগ করেন, এমবাপ্পে তাকে পাস দেন না। তখন থেকেই দলে বিভক্তির সূচনা।

এরপর হুগো লরিস, মান্দান্দা ও সিসোকো সহ দলের বেশ কয়েকজন সিনিয়র ফুটবলার এমবাপ্পেকে নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন। ২২ বছর বয়সী এই পিএসজি ফরোয়ার্ডের বিরুদ্ধে সবার অভিযোগ, তিনি বেশ খামখেয়ালী এবং সতীর্থদেরকে খুব একটা পাত্তা দেন না। সুইজারল্যান্ডের কাছে হারের পর একই অভিযোগ করেন র‌্যাবিয়টের মা-ও। তিনিও বলেন, এমবাপ্পেকে তার ‘মুডি’ স্বভাব বদলাতে হবে এবং তার ‘ইগো’ কমাতে হবে।
গ্রুপপর্বের ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন ফরাসী ফরোয়ার্ড ওসুমানে দেম্বেলে। পরবর্তীতে পুরো আসর থেকেই ছিটকে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় দলের খেলোয়াড়রা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করেন।ফরাসী গণমাধ্যমগুলো বলছে, সুইসদের বিপক্ষে ম্যাচের সময় র‌্যাবিয়ট ও পগবা একজন অন্যজনকে মাঠেই অপমান করেন। কেবল তারাই নন। রাফায়েল ভারানেও নাকি দুর্বল ডিফেন্ডিংয়ের জন্য তার সতীর্থ বেঞ্জামিন পাভাকে নানান কথা শুনিয়ে দেন। অন্যদিকে পাভা বকাঝকা করেন পগবাকে। তার অভিযোগ, পগবা নাকি তাকে ডিফেন্সে সহায়তা করছে না।ইংল্যান্ড, ইতালি কিংবা স্পেন নিজেদের দেশে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেও, ফ্রান্স তাদের সবগুলো ম্যাচই খেলেছে মিউনিখ, বুদাপেস্ট এবং বুখারেস্টে। ফলে তাদেরকে কাটাতে হয়েছে বিভিন্ন হোটেলে। এরমধ্যে টিম হোটেল নিয়ে হতাশ হতে দেখা গেছে ফরাসী ফুটবলারদেরকে। বিশেষ করে হাঙ্গেরিতে তারা যে হোটেলে ওঠেন সেটি পরিবর্তন করার জন্য দলকে অনুরোধও জানিয়েছিলেন পল পগবা। তবে তার অনুরোধ রাখা হয় নি। ইউরোতে ফ্রান্সের ভরাডুবির জন্য এটিকেও একটি কারণ মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *