‘বাংলাদেশ থেকে আইপিএল বেশি উপভোগ করেন মুস্তাফিজ ভাই’
দেশের এক মাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ভারতে চলমান আইপিএলে খেলছেন মুস্তাফিজুর রহমান। পাঁচ বারের শিরোপা জয়ী দল চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলছেন তিনি। আর প্রথম ম্যাচ থেকেই নিজের চৌকশ বোলিংয়ে মাতিয়ে রাখছেন দর্শকদের। রয়েছে আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হওয়ার দৌড়েও। আর মুস্তাফিজের এমন ছন্দে থাকার কারণ হিসেবে জাতীয় দলের থেকে চাপ কম থাকাকেই মনে করছেন তার জাতীয় দলের সতীর্থ শরিফুল ইসলাম।
শুধু মুস্তাফিজ নয়, এবারের আইপিএলে খেলার প্রস্তাব এসেছিল শরিফুল ইসলামের কাছেও, লখনৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে মাঠ মাতানোর প্রস্তাব এসেছিল তার কাছে। যদিও বিসিবি থেকে এনওসি অংশগ্রহণ করা হয়নি তার। তাই দেশেই খেলেছেন ডিপিএল, তবে এর মধ্যেই নিয়মিতই সেখানে থাকা তার সতীর্থ ও জাতীয় দলের তারকা পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং দেখেন তিনি এবং ম্যাচের পর তার সঙ্গে কথাও হয় তার।
গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এমনটি জানান শরিফুল। বলেন, ‘মুস্তাফিজ ভাইয়ের প্রতিটা বল দেখি (আইপিএলের) এবং ওনার সঙ্গে ম্যাচের পরের দিন কথা হয়।’ শুধু তাই নয়, তিনি মনে করেন টাইগার কাটার মাস্টার দেশে খেলার থেকে আইপিএলে খেলাটা উপভোগ করেন বেশি। বলেন, ‘বাংলাদেশের থেকে আইপিএলে মুস্তাফিজ ভাই বেশি উপভোগ করেন, কারণ হচ্ছে চাপটা খুবই কম আর কি। এখানে হয়তো অনেক চাওয়া থাকে, হয়তো একটু খারাপ হলে অনেক প্রেশার পড়ে।’
এ সময় দেশে খেলতে কী ধরনের চাপ অনুভব করেন মুস্তাফিজ, ব্যাখ্যা করে শরিফুল বলেন, ‘উনি (মুস্তাফিজ) ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করছেন। শুধু লাস্ট কয়েকটি ম্যাচে হয়তো ঐরকম আশানুরূপ করতে পারেননি। কিন্তু চাপ বলতে ওনার কাছে সবার চাওয়াটা একটু বেশি থাকে। কারণ উনি সব শেষ কয়েক বছর ধরে ভালো পারফর্ম করছেন। তারপরও সবার চাওয়া অনুযায়ী হয়তো কয়েকটি ম্যাচে করতে পারেননি, এটাই আরকি।’
শুধু মুস্তাফিজ নয়, তার ওপরও যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের চাহিদা বাড়ছে, তা নিজেও জানেন শরিফুল। কেননা ধারাবাহিকভাবেই পারফর্ম করে যাচ্ছেন তিনি। বল হাতে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের ওপর চাপ তৈরি করেন, তুলে নেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এতে করে সমর্থকদের তার ওপর ভরসা বাড়ছে। তবে এটাকে চাপ হিসেবে নিচ্ছেন না তিনি। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ বাড়ছে, তবে আমি ঐগুলো নিয়ে ভাবছি না। আমার পরিকল্পনায় রয়েছে যেভাবে ধারাবাহিকভাবে পারফরম্যান্স করছি, সেটাই ধরে রাখা, যদি সুস্থ থাকি।’
এদিকে টানা ম্যাচের মধ্যে রয়েছেন শরিফুল ইসলাম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ শেষেই মাঠে নেমেছেন ডিপিএলে আবাহনীর হয়ে। এর মধ্যেই হয়তো আগামী মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও দেখা যাবে তাকে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র সফর, সেখানে স্বাগতিকদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে টাইগাররা। পাশাপাশি অংশ নেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। সব কিছু ঠিক থাকলে সেখানেও বল হাতে দেখা যাবে শরিফুলকে।
তবে দেশের বর্তমান তপ্ত আবহাওয়ায় এমন ধারাবাহিক ম্যাচের কারণে চোটের শঙ্কাও রয়েছে তার। বিশ্রামের দরকার যদিও, আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন তাকে ছুটি নেওয়ার জন্য বলেছিলেনও, তিনি নেননি। এ বিষয়ে বলেন, ‘অনেক গরম। তারপর আমাদের ঐভাবেই খেলতে হবে গরমের মধ্যে, যেহেতু খেলাটা চলছে। তো আমরা সেভাবে চিন্তা করিনি যে এতটা গরম চিন্তা করলে হয়তো আরেকটু বেশি গরম লাগত। আমাদের পরিকল্পনায় ছিল যে, আমরা দুই-তিন ওভার করে একটু বেরিয়ে (ড্রেসিংরুমে) পরে আবার যাব, এভাবেই মেইনটেন করে করা।’
এ সময় কোচের ছুটি কেন নেননি জানিয়ে বলেন, ‘স্যার (সুজন) আমাকে বলেছিল যে, তুমি যদি বিশ্রাম চাও তাহলে বিশ্রাম নিতে পারো। সে সময় আমি বলেছিলাম ঈদের পর যেহেতু আর খেলা নেই, তো আমার দুই-একটা ম্যাচ খেললে হয়তো ফিটনেসটা আরেকটু ভালো থাকবে, আমি খেলতে চাই।’ তবে পরবর্তী ম্যাচে বিশ্রাম নেবেন বলে পরিকল্পনা করছেন শরিফুল।