‘বাঙালি জীবনে গানের গুরুত্ব কখনো কমবে না’
‘শুধু তোমার জন্য’এবং ‘যে পাখি ঘর বোঝে না’—এই দুই গান দিয়ে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন কণ্ঠশিল্পী ধ্রুব গুহ। এরপর ‘আদরে রাখিও বন্ধু’, ‘একলা পাখি’, ‘তোমার ইচ্ছে হলে’, ‘তোমার উঁকিঝুঁকি’ এবং ‘দাগা’ গানগুলোর মাধ্যমেও হয়েছেন প্রশংসিত, পেয়েছেন শ্রোতা ও দর্শকদের ভালোবাসা।
নিজের গান ও গানের প্রতিষ্ঠান নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
নিজের গানের প্রতি ভালোবাসা থেকেই প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেছিলেন। এত বছর পর নিজের প্রতিষ্ঠানটিকে কি স্বপ্নের পরিধিতে আঁকতে পেরেছেন?
দেখুন, ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি অন্যরকম টান ছিল আমার। তাইতো গান ভালোবেসে, বাংলা গানের প্রতি নিজের দায়বদ্ধতা থেকে প্রতিষ্ঠা করেছি অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ধ্রুব মিউজিক স্টেশন’। এই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নিয়মিতভাবে প্রকাশ করে যাচ্ছে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী থেকে শুরু করে নতুন প্রতিভাবানদের গান। বরং প্রতিষ্ঠানটির সাথে কাজ শুরু করার পর থেকে নিজের কাজ কমিয়ে দিয়েছি। নিজের গানের রিলিজ কমে গেছে।
কিন্তু শিল্পীরা তো প্রচণ্ড ঈর্ষাকাতর হয়। নিজের অবস্থান থেকে একচুলও নড়তে চায় না। সেক্ষেত্রে নিজে গানের শিল্পী হয়ে অন্যদের যেভাবে প্রমোট করছেন! এই বিষয়গুলো কীভাবে দেখেন?
নিজে শিল্পী হয়েও অন্যের গান প্রকাশ ও প্রচারকেই প্রাধান্য দিয়ে এসেছি। একেক মানুষের জীবনের আনন্দযাপন একেকরকম। আমি হয়তো এভাবেই বাঁচতে ভালোবাসি। সবাইকে নিয়েই থাকতে চাই।
গত ১৪ জানুয়ারি আপনার জন্মদিন ছিল। এই দিনে সাধারণত কী কাজ করেন। বা জীবনের নতুন একটি বছরে কী শপথ নিলেন।
জন্মদিনে প্রথম যে কাজটা করি, তা হচ্ছে বাবা-মায়ের আশীর্বাদ নিই এবং স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। এরপর দিনের বেশিরভাগ সময়টা নিজের পরিবারের সাথেই কাটানোর চেষ্টা করি। এছাড়াও নিজের প্রিয় কর্মস্থল ধ্রুব মিউজিক স্টেশনের সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে জন্মদিনের আনন্দটা ভাগাভাগি করে নিই। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, এখন তো ডিজিটাল যুগ। ডিজিটাল মাধ্যমেই দিনভর আমার বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী, আমার গানের শ্রোতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় আমার কাছে যেটা মনে হয়, জন্মদিনে আগামী বছরের জন্য সুস্থ, সুন্দর ও সঠিক পরিকল্পনা আর সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে সাধ্যমতো চেষ্টা করে গেলেই জন্মদিন উদ্যাপন সার্থক হয়ে ওঠে।
একই পুরোনো অভিযোগ। তবুও নতুন করে করতে হচ্ছে, আপনার নতুন গান পাই না দীর্ঘদিন। পেলেও খুব কম। এর মাঝে বেশ কিছু চমক জাগানো খবরও আমরা প্রকাশ করেছি। দেশি–বিদেশি চলচ্চিত্র তারকারাও আপনার গানে কাজ করেছে। সেই গানগুলো কবে রিলিজ পাবে?
এই অভিযোগটি সবারই। তবে অল্প দিনের মধ্যেই প্রকাশ করবো আমার নতুন গান। গানটির অডিওর কাজ শেষ, এখন চলছে এর ভিডিও নির্মাণের পরিকল্পনা। নতুন এই গানটিতে কিছু চমক থাকবে আশা করছি। শিগগির গানটি ধ্রুব মিউজিক স্টেশন থেকেই প্রকাশ পাবে।
বারবার আমরা আলোচনায় আনি অডিও গানের ভবিষ্যত্ নিয়ে। ডিজিটাল কন্টেন্ট হিসেবে অন্যকিছু যতটা গুরুত্ব পাচ্ছে—সেই তুলনায় অনেক পিছিয়ে অডিও গান। এ ব্যাপারে কী বলবেন?
আসলে আমাদের লিসনিং ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো এদেশে যখন জনপ্রিয় হবে, তখন দৃশ্যপট পাল্টে যাবে। আমরা বাঙালি কিন্তু বারেবারে নিজেদের লাইফস্টাইল পরিবর্তন করেছি। তাই আমি বলবো, অ্যাপল মিউজিক, স্পটিফাই থেকে শুরু এধরনের অ্যাপ যখন জনপ্রিয় হতে শুরু করবে, তখন এমনিতেই অডিও রেভিনিউ বেড়ে যাবে। অডিও গান থেকে একাধিক উপায়ে রেভিনিউ যখন কেউ পাবে, তখনই মূলত গানের ক্ষেত্রে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। এটা লাইফস্টাইলের বিষয়। বাঙালি জীবনে গানের গুরুত্ব কখনো কমবে না। আমি ভীষণ আশাবাদী।