বাড়তি বাউন্সেই যত সর্বনাশ
ক্রিকেট ইতিহাসের বিখ্যাত এক ভেন্যু জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়াম। গতকাল রবিবার বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে ওয়ান্ডারার্সের অতীতকে ভুলে যাওয়ার অবকাশ নেই। এই মাঠেই ২০০৬ সালে ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচ হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়ার ধ্রুপদী লড়াইয়ে ৪৩৪ রান টপকে জিতেছিল স্বাগতিকরা। ২০১৫ সালে এখানে এবি ডি ভিলিয়ার্সও ৩১ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন।
এসবের ছিটেফোঁটাও অবশ্য গতকাল বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে ছিল না। ইনিংসের শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল টাইগাররা। রাবাদা-লুঙ্গিরা উইকেট থেকে বাড়তি বাউন্স পেয়েছেন। তাতেই নাকাল হয়ে আউট হয়েছেন তামিম-সাকিবরা। পরে বাংলাদেশের বোলিংয়ের সময়ও বাড়তি বাউন্স দেখা গেছে। মূলত ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর ধাক্কাই ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে দিয়েছে বাংলাদেশকে।
সেঞ্চুরিয়নের দাপুটে ব্যাটিংয়ের ছবিটা ওয়ান্ডারার্সে বয়ে আনতে পারেননি লিটন-ইয়াসিররা। আফিফ হোসেনের অনন্য হাফ সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে ১৯৪ রানের পুঁজি গড়েছিল বাংলাদেশ। শুরুর বিপর্যয়ের কারণেই উইকেটের প্রকৃত সুরটা ধরতে পারেনি টাইগাররা। সেখানে প্রোটিয়া ফাস্ট বোলারদের কৃতিত্বও অনেক। রাবাদা একাই ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন। ৩৯ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
ইনিংসের শুরুতে লিটন, সাকিব, ইয়াসির আলিকে ফিরিয়েছেন। বাংলাদেশের হয়ে প্রতিরোধ গড়া আফিফ, মিরাজকেও তিন বলের ব্যবধানে আউট করেছেন ডানহাতি এ দ্রুতগতির পেসার। আফিফ ৭২, মিরাজ ৩৮, মাহমুদউল্লাহ ২৫ রান করেন।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে লুঙ্গি এনগিদির লাফিয়ে উঠা বল সামলাতে পারেননি তামিম (১)। বল চলে গেছে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ফিল্ডারের হাতে। সাকিবকে করা রাবাদার বলেও ছিল বাড়তি বাউন্স। ফ্লিক করতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ দেওয়া সাকিব রানের খাতা খুলতে পারেননি। অষ্টম ওভারে লিটনের বুক উচ্চতায় উঠেছিল রাবাদার শর্ট বল। আপার কাট খেলতে গিয়েও শেষ মুহূর্তে সরে যাওয়ার জন্য লিটনের (১৫) চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বল উইকেটকিপারের গ্লাভসে জমা পড়ে।
একই পেসারের শর্ট বলে ইয়াসিরও (২) ক্যাচ দেন। পা
পড়েছিলেন মুশফিক (১১)। সকালের এমন দুর্যোগেই পথ হারিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুও জানালেন, সকালের এক ঘণ্টায় বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি ব্যাটাররা। তিনি বলেন, ‘সকালে একটু বাড়তি বাউন্স হচ্ছিল। বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারিনি আমরা। ওই সময়টা পার করে দিলে কিন্তু স্কোরটা বড় হতো। আমার মনে হয় প্রথম ম্যাচ জিতে আত্মতুষ্ট হওয়ার কিছু নেই। ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে এমন হয়েছে। এজন্যই ওরা আমাদের সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন উইকেটে খেলে।’