বাহারুলের ‘বাহাদুরী’ দেখল গ্রামবাসী

Share Now..

\ শৈলকুপা প্রতিনিধি \
বাহারুলের শুরুটা মাটির ব্যাংকে জমানো ৬০ হাজার টাকা দিয়ে। সদরঘাট থেকে কাপড় কিনে ডেনিম জিন্স প্যান্ট তৈরি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে প্রচারণা। আর মাথায় নিজের জন্য কিছু করা প্রবল ইচ্ছাশক্তি। সাথে নিজের তৈরি করা একটি প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস এবং বেকারদের কর্মসংস্থান ব্যবস্থা। তবে লক্ষ্যের শুরুটা তিক্ত। করতেন গার্মেন্টসে চাকরী। মাসের পর মাস হাড়ভাঙ্গা খাটুনীর পরও মিলত না আত্মতুষ্টি। কারন ঠিকমত বেতন পেতেন না। পরে মাটির ব্যাংকে জমানো ৬০ হাজার টাকা দিয়ে কাপড় কিনে শুরু করেন ভাল মানের জিন্স প্যান্ট তৈরি। কিন্তু বিপত্তি বাধে বিক্রিতে। কে কিনবে তার তৈরিকৃত প্যান্ট? এমন বিপত্তিতে মাথায় আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে তার তৈরিকৃত কাপড় বিক্রির কথা। যেই ভাবা সেই কাজ। ফেসবুকে পেজ খুলে শুরু করেন নিজের তৈরিকৃত কাপড়ের প্রচারণা। শুরুতে সাড়া না মিললেও ধীরে ধীরে শুরু হয় কাপড় বিক্রি। সেইখান থেকে আজ বাহারুল ইসলাম একটি গার্মেন্টস এর মালিক। নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বেকার যুবকদের জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন কর্মসংস্থানের। দীর্ঘদিন পর বাড়িতেও ফিরলেন হেলিকপ্টার যোগে। বাহারুল ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। শনিবার (১৫ জুন) বিকালে স্ব স্ত্রীকে হেলিকপ্টারযোগে অবতরণ করেন আদিল উদ্দীন ডিগ্রি কলেজ মাঠে। সেখান থেকে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় পরিবার ও এলাকাবাসীরা। তাকে এক নজর দেখতে উৎসুক জনতা ভীড় করে কলেজ মাঠে। বাহারুল জানান ‘প্রথম দিকে অন্যের গার্মেন্টসে কাজ করলেও বর্তমানে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘গ্রাজুয়েট ফ্যাশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানে তৈরি কাপড় দেশের পাশাপাশি বিশ্বের ২৯ টি দেশে পৌছে যাচ্ছে। বাহারুলের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন ‘বাহারুলের প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তিই তাকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে। আমরা তাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। বাহারুল ইসলাম বলেন ‘নিজের পাশাপাশি বেকারদের বেকারত্ব দূর করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে আছে ‘গ্রাজুয়েট ট্রাস্ট’। যেখান থেকে শত শত অসহায় মানুষকে সাহায্য করা, অভাবে লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়া, কর্মসংস্থান তৈরি, অসুস্থদের চিকিৎসা সহায়তা করাসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়। ইচ্ছা থাকলে জয় করা সম্ভব। তাই বসে না থেকে প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করলে সফলতা আসবে। যেকোন বেকারদের নানা সমস্যা-সম্ভাবনায় পাশে থাকব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *