বিদায় বেলায় ইসরাইল সফরে মার্কেল

Share Now..


জার্মানির বিদায়ী চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বলেছেন, জার্মান সরকারের কাছে ইসরাইলের নিরাপত্তার বিষয়টিই সব সময় অগ্রাধিকার পাবে। ইহুদিবাদী দেশটিতে নিজের শেষ রাষ্ট্রীয় সফরে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘হলোকাস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধ পরবর্তী সময়ে ইসরাইল ও জার্মানির মধ্যকার সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। এটাকে আমরা একটা সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করতে চাই। এ ক্ষেত্রে ইসরাইলের নিরাপত্তার বিষয়টি সবসময় প্রত্যেক জার্মান সরকারের কাছে অগ্রাধিকার পাবে।’
রাজনীতি থেকে বিদায় নিচ্ছেন মার্কেল। আগামী ডিসেম্বরেই শেষ হতে যাচ্ছে তার ক্ষমতার মেয়াদ। তার আগে ইসরাইল সফরে এলেন তিনি। চ্যান্সেলর হিসাবে এটা তার অষ্টম ইসরাইল সফর। গত আগস্ট মাসেই এই সফর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর বিশৃঙ্খল সেনা প্রত্যাহারের কারণে সেটা পিছিয়ে দেওয়া হয়। এএফপি জানায়, গত রোববার ইসরাইলে এসে পৌঁছান মার্কেল। সফরের শুরুতেই দেশটির জাতীয় হলোকাস্ট স্মৃতিশৌধ ‘ইয়াদ ভাসেম মেমোরিয়াল’ পরিদর্শন করেন তিনি। এরপর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। ১৯৪৮ সালে হলোকাস্টের পরিপ্রেক্ষিতে ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর প্রায় ১৭ বছর পর ১৯৬৫ সালে জার্মানি-ইসরাইলের মধ্যে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বৈঠকে এ দুই নেতার মধ্যে ইসরাইলের নিরাপত্তা ও ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে ইরান পরমাণু চুক্তি ও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মতো বিষয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন মার্কেল। তিনি বলেছেন, জার্মানি ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের ওই চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বিরাষ্ট্র সমাধানকেই কয়েক দশকের সংঘাত নিরসনের উপায় বলে মনে করে তার দেশ। তার ভাষায়, ‘দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের বিষয়টিকে আলোচনা থেকে সরিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের রাষ্ট্রে নিরাপদে বসবাসের সুযোগ থাকা উচিত।’ ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালের আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তিতে জার্মানি ছিল শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে ইসরাইলের সমর্থন নিয়ে চুক্তি থেকে সরে আসেন। এর পরই চুক্তিটি ভেঙে যায়। ইউরোপে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ও সর্বাত্মক সমর্থক জার্মানি। ফিলিস্তিনে হামলা এবং ক‚টনৈতিক সংকটের সময়ও জার্মান সরকার ইসরাইলকে সমর্থন দিয়েছে। ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে প্রথম দিকে মার্কেলের বেশ দহরম-মহরম ছিল। তবে ফিলিস্তিন ইস্যুতে মতভেদের কারণে শেষদিকে সেই সম্পর্কে শীতলতা আসে। জার্মানি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সমর্থন করে, যা নেতানিয়াহু এবং বেনেট সমর্থন করেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *