বিরোধীদলীয় নেতা-উপনেতা বিষয়ে এই প্রথম আইন হচ্ছে

Share Now..

জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও বিরোধীদলীয় উপনেতার বিষয়ে দেশে প্রথমবারের মতো আইন হতে যাচ্ছে। বর্তমানে পূর্ণমন্ত্রীর পদমর্যাদার ‘বিরোধীদলীয় নেতা’ মনোনীত হন সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী। আর প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার ‘বিরোধীদলীয় উপনেতা’ নির্বাচিত হয়ে থাকেন ১৯৭৯ সালের অধ্যাদেশের বলে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে অধ্যাদেশটি রহিত করে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ‘জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও বিরোধীদলীয় উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল, ২০২১’ নামে বিলটি সংসদে চলতি বাজেট অধিবেশনেই উত্থাপনের জোর সম্ভাবনা রয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল বৃহস্পতিবার ইত্তেফাককে বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতার বিষয়ে ১৯৭৯ সালের যে অধ্যাদেশ রয়েছে সেটি রহিত করে আইন প্রণয়নের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। এমনকি আইনটি বাংলায় করার কথাও বলা হয়েছে আদালতের আদেশে। আদালতের রায়ের আলোকেই আইনটি করা হচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, সংসদের চলমান অধিবেশনেই বিলটি তোলা হতে পারে।
‘জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও বিরোধীদলীয় উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল, ২০২১’ এর খসড়ায় গত ৩১ মে নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার ঐ বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, ১৯৭৯ সালের অধ্যাদেশটি বাতিল করে আইনে রূপান্তরের বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। তবে আইনের খসড়ায় তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা কে হবেন; কীভাবে হবেন—সেটির ব্যাখ্যা স্পষ্ট করা হয়েছে খসড়ায়।

বিরোধীদলীয় নেতা বা উপনেতার বিষয়ে দেশের সংবিধানেও কিছু বলা নেই। তবে ‘বিরোধীদলীয় নেতা বা উপনেতার (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) অধ্যাদেশ-১৯৭৯’-এ তাদের পারিতোষিক ও মর্যাদার কথা বলা হয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতার স্বীকৃতি দেওয়ার একক ক্ষমতা সংসদের স্পিকারের।

বিরোধীদলীয় নেতা মনোনয়নের বিষয়ে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ২(১)(ট) বিধিতে বলা হয়েছে, “‘বিরোধীদলের নেতা’ অর্থ স্পিকারের বিবেচনামতে যে সংসদ সদস্য সংসদে সরকারি দলের বিরোধিতাকারী সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য লইয়া গঠিত ক্ষেত্রমত দল বা অধিষঙ্গের নেতা”। তবে কার্যপ্রণালী বিধিতে বিরোধীদলীয় উপনেতার বিষয়ে কিছু বলা নেই।

বিরোধীদলীয় নেতা বা উপনেতার (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) অধ্যাদেশ-১৯৭৯ বলেই বিরোধীদলীয় নেতা মন্ত্রী এবং উপনেতা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। গত ৩১ মে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা কে হবেন; কীভাবে হবেন সেটির ব্যাখ্যা স্পষ্ট করা হয়েছে নতুন করে হতে যাওয়া আইনের খসড়ায়। তবে আইনমন্ত্রী গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমার জানা মতে আইনের খসড়ায় বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতার বেতন-ভাতাদি সম্পর্কে বলা আছে, সেখানে তাদের নিয়োগ বা মনোনয়ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে কিছু নেই’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *