বেনাপোল ইমিগ্রেশনে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ভোগান্তি

Share Now..

\ যশোর জেলা প্রতিনিধি \
বেনাপোল ইমিগ্রেশনে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। ইমিগ্রেশনের অব্যবস্থাপনায় বেশি কষ্ট ভোগ করছেন বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা। যাত্রীদের অভিযোগ, গত বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৭ লাখ ১৫ হাজার ৮শ ১৪ জন ভারতে গেছেন। বেনাপোল দিয়ে যাতায়াত বাড়লেও সেবার মান বাড়েনি ভারত ও বাংলাদেশের কোনো অংশেই। ভোর সাড়ে ৬টা থেকে পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু হলেও যাত্রীরা ভোর ৪টা থেকে চেকপোস্টে এসে লাইলে দাঁড়ান। যাত্রী ছাউনি না থাকায় খোলা আকাশের নিচে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের। আবার অনেকে লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা এড়িয়ে দালালকে ৫শ থেকে এক হাজার টাকা দিলেই ৫ মিনিটে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছে, ভারত যাতায়াতে প্রতি জনের কাছ থেকে ৫৫০ টাকা ভ্রমণ কর ও ভিসা ফি বাবদ ৮৪০ টাকা আদায় করছে ভারতীয় দূতাবাস। গত বছর কেবল বেনাপোল বন্দর দিয়ে যাতায়াতকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ বাংলাদেশ সরকার আয় করে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা। আর ভিসা ফি বাবদ ভারত সরকারের আয় ৬০ কোটি টাকার বেশি। তবে যাতায়াতকারী যাত্রীরা সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বেনাপোল চেকপোস্টে কথা হয় রাজিয়া বেগমের সাথে। তিনি বলেন, ভোর ৫টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন বেলা ৯টা বাজে। এখনো বেনাপোল ইমিগ্রেশন পার হতে পারলাম না। কখন ভারত যাবো আল্লাহ জানেন। আর এক যাত্রী মকবুল হোসেন বলেন, বন্দরে যে দালাল ধরছে সে পার হতে পারছে। কোনো লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা নেই। প্রশাসন থাকলেও দেখার যেন কেউ নেই। ভারত থেকে আসা গোপাল পাল বলেন, ভারতের সীমান্ত পার হতেই ৪ ঘন্টা সময় লেগেছে। যাত্রীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে চেকপোস্ট এলাকায়। ক্যান্সার বা দুরারোগ্য রোগীদের পৃথক কোনো লাইনের ব্যবস্থা না থাকায় তারাও পড়ছেন বিপাকে। যাত্রীদের অভিযোগ, সোনালী ব্যাংক, পোর্ট গেট, কাস্টমস স্ক্যানিং পয়েন্টে, কাস্টমস আনসার গেট, ইমিগ্রেশন বর্হিগমন ও ইমিগ্রেশন চেক আউট গেট নিয়ে মোট ৮টি লাইন। আর এ সকল কাজ শেষ করে আসতে সময় লাগছে তিন থেকে চার ঘন্টা। তবে দালালদের ৫শ বা এক হাজার টাকা দিলেই ৫ মিনিটে কাজ শেষ করে ভারতে যাওয়া যায়। তারা আরও বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এখন সকালের জায়গায় ভোর ৪টার মধ্যে বন্দরে ভিড়ছে দূরপাল্লার সব যাত্রীবাহী বাস। তবে যাত্রীরা দ্রæত পৌঁছালেও বন্দর সকাল সাড়ে ৬টায় খোলায় তাদের দীর্ঘসময় সড়কের ওপর লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দালালদের বিষয়ে বেনাপোল স্থল বন্দর আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ ক্যাম্পের ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমান বলেন, কারো কাছে টাকা এবং পাসপোর্ট দিয়ে প্রতারিত না হতে বার বার মাইকিং করে যাত্রীদের সতর্ক করা হয়। মাঝে মধ্যে দালালদের ধরে পুলিশে দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বেনাপোল স্থলবন্দর আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের ইনচার্জ আব্দুল হাফিজ বলেন, ভোর সাড়ে ৬ টায় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শুরু হয়। তবে দূরপাল্লার পরিবহন ভোর ৪টা-৫টার মধ্যে চেকপোস্টে চলে আসে। তখন থেকে যাত্রীরা লাইনে দাঁড়ান। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকায় অনেক বৃদ্ধ-নারীসহ শিশুদের কষ্টের সীমা থাকে না। আমরা চেষ্টা করছি সঠিক সেবা দিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *