ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করতে মিষ্টির দোকানে ইট দিয়ে ভর্তি করলেন জমির মালিক
এস আর নিরব, যশোরঃ
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের ছুটিপুর বাজারের শ্যামলী মুসলিম হোটেল নামের একটি মিষ্টির দোকানের প্রবেশের পথ ইট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ।
রোববার সারাদিন জমজমাট বেচাকেনা করে রাত ১২টায় দোকান বন্ধ করে বাড়িতে ফেরেন মিষ্টি ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন। প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার (১৯ জুন) সকালে মিষ্টির দোকান খুলতে গিয়ে দেখেন ইটে ভর্তি তার মিষ্টির দোকান। দোকানে যাতে প্রবেশ করা না যেতে পারে তার জন্য দোকানের সামনে তুলে দেওয়া হয়েছে ইটের পাহাড়।
এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে
দোকানের মালিক ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেন পার্শবর্তী গুলবাগপুর গ্রামের মৃত আওয়াল হোসেনের ছেলে। দোকান মালিকের অভিযোগ জমির মালিক দোকান থেকে উচ্ছেদ করতেই এই কাজ করেছে।
ভুক্তভোগী বিল্লাল হোসেন বলেন, বিগত ৩০ বছর পূর্বে ছুটিপুর গ্রামের মৃত আরাতন মন্ডলের ছেলে আইয়ুব হোসেন ও কোহিনূর হোসেনের নিকট থেকে মৌখিক ভাবে কিছুটা জমি ভাড়া নিয়ে নিজ খরচে স্থাপনা নির্মাণ করে শ্যামলী মুসলিম হোটেল চালু করি। গত কয়েকমাস ধরে জমির মালিকেরা আমাকে জায়গা খালি করে দিতে চাপ দিয়ে আসছিলো। এটা নিয়ে বাজার কমিটির মধ্যস্থতায় কয়েকবার সালিসি বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ রোববার দিবাগত রাতে হোটেল বন্ধ করে বাড়ি চলে যাওয়ার পর আয়ুব-কোহিনুর বাহিনী রাতের আঁধারে হোটেলের সামনে ও ভেতরে ইটের গাদা দিয়ে প্রবেশ পথের সবটা বন্ধ করে দিয়েছে।
হোটেল মালিক বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, দোকানের মধ্যে দুধ, ছানা, দই সহ কয়েক মন মিষ্টি তৈরি করা রয়েছে। তাছাড়া মিষ্টি তৈরির কাচামাল আছে লাখ দুই টাকার। ৩০ বছর ব্যবসা করছি। অনেকের কাছে পাওনা টাকাও বকেয়া রয়েছে। এই অবস্থায় দোকান কেড়ে নিলে আমাকে পথের ভিখারি হয়ে যেতে হবে।
অভিযোগের ব্যাপারে জমির মালিক কোহিনূর হোসেন বলেন, বিল্লালকে অনেক আগে ঘর ছেড়ে দিতে বলা হলেও সে ঘর ছাড়েনি। অবশেষে বাজার কমিটির সবার সাথে কথা বলে হোটেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ছুটিপুর বাজার কমিটির সভাপতি হায়দার আলী বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমরা বিষয়টি নিয়ে বসেছিলাম। বিল্লালকে ৩০ জৈষ্ঠ্য পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। দোকানের সামনে ইট রাখার বিষয়টি শুনেছি। আমি জমির মালিককে অনুরোধ করবো আরও কিছুদিন সময় দেওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান ঝন্টু বলেন, জমির মালিককে আমরা সালিশি বৈঠকে আরও ৬ মাস সময় দিতে অনুরোধ জানিয়েছিলাম কিন্তু তারা আমাদের অনুরোধ রাখেননি। তবে বিল্লালের দোকানে ইট দিয়ে ভর্তি করার কাজটি তারা মোটেও ঠিক করেনি।