মহেশপুরের বালিশ মিষ্টি যাচ্ছে দেশের বাইরে

Share Now..

\ আব্দুস সেলিম, মহেশপুর \
অজ পাড়াগায়ে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি (বালিশ’মিষ্টি)! সেই মিষ্টির স্বুখ্যাতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন যাচ্ছে বিদেশেও। “বালিশ” নামটা সকলের কাছেই পরিচিত। মানুষ দিনের ক্লান্তি শেষে বালিশ মাথায় দিয়ে আরামে বিছানায় ঘুমায়। তবে আরেক লোভনীয় সুস্বাদু বালিশ খায়ও! শুনে অনেকে অবাক হতে পারেন। কিন্তু সত্যিই বালিশ খাওয়া যায়! আর যদি সেটা হয় ঝিনাইদহের দেশ বিখ্যাত সুস্বাদু ‘বালিশ’ মিষ্টি। তাহলে তো কথায় নেই। অজ পাড়াগায়ের এ মিষ্টির স্বুখ্যাতি দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন যাচ্ছে বিদেশেও।
একেকটি মিষ্টির ওজন দুই কেজি। বালিশের মতো দেখতে তাই ক্রেতারাই এ মিষ্টির নামকরণ করেছেন। জেলা শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সীমান্তবর্তী উপজেলা মহেশপুরের ভৈরবা বাজার। এ বাজারে সপ্তাহে দুই দিন,শনি ও মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর থেকে বিকিকিনি চলে গভীর রাত পর্যন্ত। এ বাজারেই গত ৩৫ বছর মিষ্টি বিক্রি করেন হযরত আলী। তার নিজের হাতে তৈরি বালিশ মিষ্টি কিনতে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। বিশাল-বিশাল গামলায় কয়েক ধরনের মিষ্টি বিক্রি করেন তিনি। তবে একটিতে থাকে ৩ কেজি ওজনের ভিন্নধর্মী বালিশ মিষ্টি। আর অন্যগুলোয় চলে রসগোল্লা, চমচমসহ আরও হরেক রকমের মিষ্টি। বাজারে মিষ্টির দোকান বেশ কয়েকটি থাকলেও তার দোকানে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে।
‘বালিশ মিষ্টির’ মূল কারিগর হযরত আলী জানান, এ মিষ্টি তৈরি করতে প্রয়োজন মূল তিনটি উপাদান দুধ,চিনি ও ময়দা। প্রথমে দুধ থেকে তৈরি করা হয় ছানা। ছানা ও ময়দা দিয়ে তৈরি হয় মÐ,আর মÐ দিয়ে বানানো হয় মূল ‘বালিশ মিষ্টি’। সবশেষে চিনির সিরায় ভাজা হয় বালিশ। তৈরির সময় বালিশকে মুখরোচক করতে প্রয়োগ করা হয় বিশেষ কলাকৌশল। পরিবেশনের আগে বালিশের ওপরে এক ধরনের সুস্বাদু ঘন ক্ষীরের দুধ-মালাইয়ের প্রলেপ দেওয়া হয়। দুই কেজি ওজনের একটি ‘বালিশ মিষ্টি’ ৬০০
টাকায় বিক্রি হয়। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় গরমের দিন এ মিষ্টি তিন দিন এবং শীতের দিন সাত দিন পর্যন্ত ভালো থাকে।
তিনি জানান, দেশি গাভীর খাঁটি দুধ ছাড়া বালিশ মিষ্টি বানানো হলে প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যায় না। স্থানীয় বেপারীদের কাছ থেকে দেশি গাভীর দুধ কিনে বানানো হয় এই মিষ্টি। মিষ্টিতে কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার না হওয়ায় দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতারা মালয়েশিয়া, ওমান, জর্ডান, সিঙ্গাপুর সহ বিভিন্ন দেশে নিয়ে যান এই মিষ্টি।
মেহেরপুরের গাংনি উপজেলার মিঠু হোসেন জানান, এখানে একটি কাজে এসেছিলাম। কাজ শেষ করে বাজারে এসে ব্যতিক্রমী এ মিষ্টি পেয়ে গেলাম। ২ কেজি ওজনের বালিশ মিষ্টি কিনে নিয়ে যাচ্ছি।
চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর থেকে আসা নাসিম বলেন, ইউটিউবে দেখে এই মিষ্টি খেতে এসেছি। অন্যান্য মিষ্টির থেকে অনেক ভাল স্বাদ। পরিবারের জন্য কিনে নিয়ে যাবো।

2 thoughts on “মহেশপুরের বালিশ মিষ্টি যাচ্ছে দেশের বাইরে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *