মানসিক প্রতিবন্ধীর গর্ভে কার সন্তান!

Share Now..

\ বিশেষ প্রতিনিধি \
মেয়েটি মানসিক প্রতিবন্ধী। বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মত হবে। জরাজীর্ণ ময়লা কাপড়ে ঘুরে বেড়ায় ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের শেখরা বাজার এলাকায়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে নাম পরিচয়হীন পিতার সন্তানকে পেটে ধারণ করে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। বিয়ের পীড়িতে বসেনি তাই জানে না বিয়ের মর্ম, স্বামীর সোহাগ। তবুও পাগলিটা এবার মা হতে যাচ্ছে। কিন্তু অনাগত ওই সন্তানের দায়িত্ব নেবেন কে? মানসিক এ প্রতিবন্ধীর গর্ভবতী হওয়া নিয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে তোলপাড়। কে হবে শিশুর বাবা! কার লালসার শিকার এই পাগলী এ আলোচনা এখন শৈলকুপা জুড়ে। সমাজের বিবেকহীন এই জঘন্য কর্মে লজ্জিত সবাই। ইতোমধ্যে এক দম্পতি পাগলির সন্তানকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জানা যায়, ২ মাস আগে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবতী উপজেলার শেখরা বাজারে আসে এবং এলাকায় গর্ভবতী হওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমান আনুমানিক সে ৭-৮ মাসের গর্ভবতী। ইতোমধ্যে তার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় সামলোচনার ঝড় উঠেছে। সকলেই ক্ষোভ আর ঘৃণা প্রকাশ করছেন। বর্তমান সে শেখরা বাজারেই অবস্থান করে। বাড়ির ঠিকানা বলতে না পারলেও জেলার কোর্টচাদপুর এলাকার কয়েকটি গ্রামের নাম বলতে পারে। সব সময় খিটমিটে মেজাজে থাকে। কারো কথা সহ্য হয় না। অনেককেই মারার জন্য ধাওয়া করে। ফরিদুল ইসলাম নামে এক চা দোকানী তার খাবাবের ব্যবস্থা করে থাকে। রাতে বাজারেই একজন দোকানদারের দোকানের সামনে রাত্রীযাপন করে। সেখানেই একটি কাঠের খাট আছে আর এটিই তার বর্তমান বাসস্থান। উপজেলার শেখরা বাজারের চা ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম জানান, ২ মাস আগে আমাদের এই বাজারে নাম-পরিচয়হীন ওই পাগলি যুবতীকে দেখতে পায়। যাকে সবাই পাগলী নামেই চেনে। রাতে বাজারেই শুয়ে থাকে। আমি রাতে বাড়ি যাওয়ার সময় বাজারের পাহারাদারদের জিম্মায় রেখে আসি। তার জন্য একটি খাট ও মশারীর ব্যবস্থা করেছি। আমি একজন চা দোকানদার। আমি বাড়ি থেকে তার জন্য খাবার নিয়ে আসি। যখন যা খেতে চায় গরীব মানুষ হিসাবে তা দেওয়ার চেষ্টা করি। যদি মেয়ে বাচ্চা হয় তাহলে দত্তক নিতে চাই। শামীমুল ইসলাম স্বাধীন ও রোকনুজ্জামান রোকনসহ স্থানীয়রা জানান, চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়েছে এই পাগলী। তার এখন গর্ভবতী পরিচর্যা দরকার। অনাগত সন্তানের বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা দরকার। যারা মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর সঙ্গে এমন অমানবিক কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেওয়ার দাবিও জানান তারা। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা খানম বলেন, খোঁজ নিয়ে ওই নারীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের শেল্টার হোম না থাকায় আমরা এই গর্ভবতী মহিলার সেবা দিতে পারছি না। তবে যারা এমন জঘন্য কাজ করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মেহেদী ইসলাম, এমন খবর শুনে আমি হতবাক হয়েছি। কি করে একজন প্রতিবন্ধীর সাথে এমন আচরণ করতে পারে ভাবতে পারছি না। এই অমানবিক কাজের সাথে জড়িত কারা তাও খুজে বের করা কষ্টকর। তবে তাকে কিভাবে এই গর্ভকালীন সময়ে তার পাশে দাড়ানো যায় সেদিকে আমার খেয়াল থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *