মামলা জটিলতায় চার বছর ধরে কাজ বন্ধ কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট, আ’লীগের প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার ঝিনাইদহ পৌরসুপার মার্কেট
\ স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ \
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের কোন্দল ও প্রতিহিংসার রাজনীতির রোষানলে পড়ে ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঝিনাইদহ পৌরসুপার মার্কেটের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে আছে। চার বছর আগে আদালতের আদেশে নির্মাণ করা বন্ধ হলেও ঝিনাইদহ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আইনের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারেনি।
এদিকে ঝিনাইদহ পৌরসভার সুপার মার্কেটের নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সম্পদ। সেই সাথে চলছে দখল বাণিজ্য। মার্কেটের সামনে রাতারাতি দখল করে বিশেষ মহল গড়ে তুলেছে ২০টি দোকান। মার্কেটের কয়েক কোটি টাকার রডে জং ধরে মরিচা পড়ে গেছে। ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ জাইকার অর্থায়নে ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ঝিনাইদহ পৌরসুপার মার্কেটের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ চলা অবস্থায় ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির মামলার (রিট পিটিশন নং ১২৪৪০/১৯) কারণে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মার্কেটের নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয়। বাদী পক্ষের দাবী মার্কেটের জায়গায় একটি পার্ক ছিল। সেখানে বাচ্চারা খেলতো। বহুতল মার্কেট তৈরী হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে। আদালত ৬ মাসের মধ্যে সিএস ৭৮৪ দাগে অবস্থিত রাস্তা ও মসজিদ ব্যাতিত সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য নির্দেশ দেয়। মামলার বিরুদ্ধে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসটি-এমইপি (জেভি) উচ্চ আদালতে আপীল করলে বিজ্ঞ আদালত স্থিতিতাবস্থা জারী করে। গত চার বছর ধরে একই অবস্থায় মামলাটি পড়ে আছে। মামলার কারণে ঠিকাদারের দেড় কোটি টাকার সম্পদ পড়ে থেকে নষ্ট হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে সেসময় ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদ সাইদুল করিম মিন্টু। মেয়র মিন্টুর সঙ্গে স্থানীয় এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি, পৌর আ’লীগ নেতা বাবু জীবন কুমার বিশ^াস ও সাবেক যুবলীগ সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম ফোটনের বিরোধ থাকায় তারাই মুলত মার্কেট নির্মাণের বিরুদ্ধে মামলায় ইন্ধন যুগিয়েছে। কারণ হিসেবে পৌর নাগরিকরা মনে করেন, আ’লীগ নেতা ফোটনের “মকবুল প্লাজা” নামে একটি বহুতল ভবন নির্মাণাধীন ঝিনাইদহ পৌরসুপার মার্কেটের সামনেই অবস্থিত। তার মার্কেটের সামনে এমন একটি অত্যাধুনিক সুপার মার্কেট নির্মিত হলে আ’লীগ নেতা ফোটনের ব্যবসা লাঠে উঠতে পারে এমন আশংকা থেকে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিকে দিয়ে এই রিট পিটিশন করা হয় বলে শহরজুড়ে কথিত আছে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল উদ্দীন গতকাল মঙ্গলবার বিকালে জানান, পৌরসুপার মার্কেটটি নির্মিত হলে শহরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পেতো। সেই সঙ্গে বাড়তো পৌরসভার আভ্যান্তরীন আয়। তিনি জানান সুপার মার্কেটটি ছিল অত্যাধুনিক। আশপাশের কোন জেলায় এমন শপিংমল নেই। মার্কেটের ডিজাইনে ছিল ১১৯টি পার্কিং লট, চলন্ত সিঁড়ি, লিফট ও হাই পাওয়ারের জেনারেটর। ঝিনাইদহ সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সাবেক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহমেদ হোসেন জানান, উচ্চ আদালতে চলা মামলা নিম্পত্তি করে দ্রæত মার্কেটটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হোক। সুপার মার্কেটটি নির্মিত হলে শহরের আভিজাত্যতা ফুটে উঠতো বলে তিনি মনে করেন। ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ডেপুটি রেজিষ্টার আনোয়ার হোসেন জানান, রাজনৈতিক বিরোধের কারণে এমন একটি সৃষ্টি ধ্বংস করা ঠিক নয়। তিনি সুপার মার্কেটটির কাজ সম্পন্ন করার দাবী জানান। ঝিনাইদহের তরুণ উদ্যোক্তা ফিরোজ আনোয়ার মাসুম জানান, আদালতের আদেশ মানতে হলে শুধু পৌর সুপার মার্কেটই নয়, আশপাশের বহু সরকারী স্থাপনা ভাঙ্গতে হবে। তার চেয়ে বরং পৌর কর্তৃপক্ষের উচিৎ হবে অন্য স্থানে একটি শিশু পার্ক তৈরী করে বিজ্ঞ আদালতের কাছ থেকে নতুন নির্দেশনা চাওয়া। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসটি-এমইপি (জেভি)’র পক্ষে এস এম বিল্লাহ রিন্টু জানান, সুপার মার্কেটটির নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় তিনি প্রায় চার কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। দেড় কোটি টাকার নির্মাণ সামগ্রী নষ্ট হয়েছে। এছাড়া কর্তনকৃত জামানতের টাকা ফেরৎ পাননি। সব মিলিয়ে তিনি পৌরসভার কাছে সাড়ে চার কোটি টাকা পাবেন। একাধিকবার তিনি চিঠি দিয়েছেন, কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ তাকে এখনো বিল পরিশাধ করেননি। তিনি বিলের টাকা পেতে আদালতের দারস্থ হবেন বলেও জানান।
My relatives every time say that I am killing my time here at
web, however I know I am getting experience every day by reading thes fastidious articles.