যশোরের চৌগাছায় মশায় অতিষ্ট জনজীবন,ডেঙ্গু আতঙ্কে এলাকাবাসী
যশোর জেলা প্রতিনিধি:
যশোরের চৌগাছার পৌর এলাকায় মশার উপদ্রবে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে জনজীবন। বৃষ্টির কারণে ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে ক্ষুদ্র প্রাণীটির।
দিন-রাত এদের উৎপাতে নাজেহাল মানুষ। দিনের বেলায়ও অফিস কিংবা বাসা বাড়িতে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে। আর সন্ধ্যা হলেই উপদ্রব বাড়ছে কয়েক গুন।
সারাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটছে। চৌগাছাও তার ব্যতিক্রম নয়। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন চারজন। তারা হলেন, শহরের কলেজপাড়ার আবুল হোসেনের মেয়ে আফসানা খানম পায়েল (১৭), নারায়ণপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে আব্দুর রশিদ (১৩), স্বরুপদাহ ইউনিয়নের টেঙ্গুরপুর গ্রামের আকাশের ছেলে ঈশান (১৭ মাস) এবং একই এলাকার সুশান্তকুমারের মেয়ে সুস্মিতা (৪)।
এদের মধ্যে আব্দুর রশিদকে যশোরে রেফার করা হয়েছে। আফসানা খানম পায়েল স্বজনদের ইচ্ছায় যশোরে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে একজনের।
১১.৬৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের চৌগাছা পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে প্রায় ৪০ হাজার লোকের বসবাস। কপোতাক্ষ নদ চৌগাছা পৌরসভাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে । একসময় নদটি প্রবহমান ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনের দখল ও দূষণে মরা খালে পরিণত হয়েছে এটি। নদীর পানিতে প্রবাহ না থাকায় এবং দুই তীরে প্রচুর আবর্জনা থাকায় তা মশা জন্মের আদর্শ স্থানে পরিণত হয়েছে । অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভাও মশা নিধন করছে না।
চৌগাছা পৌর এলাকার হাসপাতাল ,ক্লিনিক, ছোট ছোট শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি মশার উত্তম প্রজননক্ষেত্র। এছাড়া পৌরএলাকায় নির্দিষ্ট ডাস্টবিন না থাকায় যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলেন নাগরিকরা। এটিও মশা বৃদ্ধির কারণ। মশার বাড়বাড়ন্ত মানুষকে ডেঙ্গু আতঙ্কে ভোগাচ্ছে।
পৌর এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মশার উপদ্রবে তাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। কয়েল, স্প্রে বা মশারি টাঙিয়েও মশার উৎপাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন পৌরবাসী।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানান, সারাদিন মশার উপদ্রব থাকলেও সন্ধ্যার পরপরই এই উৎপাত আরও ব্যাপকভাবে বাড়ে। ফলে সন্ধ্যায় মশার কয়েল জ্বালিয়ে বা স্প্রে দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়তে বসতে হচ্ছে। এমনকি মশার উৎপাতে নাজেহাল হয়ে মশারি টাঙিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, পৌরসভার সচিব আবুল কাশেম বলেন, মশা নিধন প্রক্রিয়া চলমান আছে।