যশোরের চৌগাছায় রাতুল হত্যার রহস্য উদঘাটন, ঘাতক দুলাভাই গ্রেফতার
যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ
যশোরের চৌগাছায় রাতুল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।গ্রেফতারকৃত আসামি শিশির আহমেদ ঝিনাইদাহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের হায়দার আলী মন্ডলের ছেলে।
জানা যায়, শ্বশুরবাড়ি ডেকে নিয়ে অপমান করায় কৌশলে পাট খেতে মধ্যে নিয়ে নিজের শালার মুখে কসটেপ পেচিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি জামায় শিশির আহম্মেদকে (২১) আটকের পর এমনই লোমহর্ষক কাহিনী বের হয়ে এসেছে।
হত্যার ক
যশোর গোয়েন্দা ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা শনিবার বেলা ১১টার গোয়েন্দা পুলিশের অফিসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানান, সোমবার বিকালে যশোর চৌগাছা লস্করপুরে পাট খেতের মধ্যে মুখে কসটেপ মোড়ানো যে মৃতদেহটি পাওয়া যায়। মৃতদেহটি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার বাজিতপুর গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে এহতেশাম মাহমুদ রাতুলের (১৮)। সে মহেশপুর সামবাজার এম.পি.বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র। এ হত্যাকাণ্ডের কোন রহস্য উদঘাটনের লেশমাত্র চিহ্ন ছিল না। হত্যাকাণ্ডের এক দিন পর মৃত ব্যক্তির খোঁজ মেলে। এরপর নিহতের বাবা মহিউদ্দিন মঙ্গলবার চৌগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির স্পর্শকতার হাওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার মামলাটির তদন্তভার দেন যশোর গোয়েন্দা ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমারের নিকটে। একপর্যায়ে রুপন কুমার মামলাটির তদন্তভার দেন যশোরের গোয়েন্দা পুলিশের চৌকস সদস্য শামীম হাসানের নিকটে। শামীম হাসান তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুক্রবারে চট্টগ্রাম থেকে হত্যা কারি শিশিরকে আটক করেন।
এ বিষয়ে নিহত বাবা মহিউদ্দিন বলেন, ঘাতক শিশির আহমেদ ৮ মাস আগে আমার মেয়েকে গোপনে নিয়ে বিয়ে করে। এরপর থেকেই সে যৌতুকের দাবি করতে থাকে। কিন্তু আমরা তাকে বারবার বলি। আমরা এখনও যৌথ পরিবারে বসবাস করি । তাই তুমি নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করো। আমাদের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে, কিছুটা সময় লাগবে। সে ঢাকায় সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করতো। কিন্তু তার লোভ লালসা ছিল খুব বেশি। এক পর্যায়ে সে কৌশলে আমার দশম শ্রেণীর পড়ুয়া ছেলে এহতেশাম মাহমুদ রাতুলকে রোববার দুপুরে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর মঙ্গলবার ফেসবুক ও অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি রাতুলকে মুখে কসটেপ মুড়িয়ে চৌগাছার পাট খেতে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এরপর আমরা যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে আমার ছেলের মৃতদেহ শনাক্ত করি।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) বেলাল হোসাইন, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুপন কুমার সরকার, ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে যশোর গোয়েন্দা পুলিশের অফিস ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার বলেন, চৌগাছা থানায় মঙ্গলবার হত্যাকাণ্ড মামলা রুজু হয়।মামলাটি ক্লুলেস হাওয়ায় যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার মামলাটির দায়িত্বভার দেন আমার কাছে।আমি তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে হত্যা মামলার আসামিকে শনাক্ত করি। এরপর চট্টগ্রাম থেকে হত্যা মামলার আসামি শিশির আহমেদকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কসটেপ হ্যান্ড গ্লাভস তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। সে প্রাথমিকভাবে এ হত্যাকাণ্ডের বিশদ বর্ণনা করেছেন। সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে প্রথমে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসা হয়। এরপর চৌগাছায় পাটক্ষেতের ভেতরে নিয়ে কোমল পানীয়তে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর তার গায়ের জামা কাপড় কেটে তার হাত-পা বাঁধা হয়। এরপর তার মুখে কসটেপ পেচিয়ে হত্যা করা হয়।