যশোরে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে ১১ প্লাটুন সেনা-বিজিবি
যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ
যশোরে করোনা সংক্রমণরোধে জনসাধারণকে ঘরে রাখতে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে ১১ প্লাটটুন সেনা ও বিজিবি। এরমধ্যে যশোরের আট উপজেলায় ৮ প্লাটুন সেনা সদস্য ও ৩ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং পুলিশের শতাধিক চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে আজ সকালে যুক্ত হয়েছেন এই দুই বাহিনীর সদস্যরা।
সার্বিক বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল দশটার দিকে যশোর কালেক্টরেট চত্বরে প্রেস ব্রিফিং করেন সংশ্লিষ্ট কর্তকর্তারা। এই সময় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে দেশজুড়ে নতুন করে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করছে সিভিল প্রশাসন। আজ তার সাথে যুক্ত হয়েছে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। জেলাজুড়ে ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে মানুষকে ঘরে রাখতে ভূমিকা পালন করছেন।
এর আগে গতকাল রাতে যশোর লকডাউন বাস্তবায়নে করণীয় নির্ধারণে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। পরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সেই অনুযায়ী অভিযান শুরু হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনযায়ী যশোরে কোন সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিস খুলতে দেয়া হবে না। জেলার কোথাও কোন ধরনের বাস, সিএনজি, রিক্সা, ভ্যান, অটোরিক্সা, মোটরসাইকেল, থ্রিহুইলার, হিউম্যান হলার চলাচল করবে না।
জেলার সকল পশুর হাট বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে সকল ধরণের দোকানপাট, শপিংমল, হোটেল, রেস্তোরা, চায়ের দোকান, বিপণীবিতান। তবে ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে।
সবাইকে অবশ্যই ঘরে অবস্হান করতে হবে। ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবার জন্য বাইরে আসা যাবে। তবে এজন্য বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ওয়াক্তের নামাজ মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন ও খাদেমসহ সর্বোচ্চ পাঁচজন ও জুম্মার নামাজ সর্বোচ্চ ২০ জন জামাতে আদায় করবেন। অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও এর বেশি জমায়েত হওয়া যাবেনা।
এসময় যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয়কুমার জোয়ারদার বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে যশোরে মোট ৬০টি টিম কাজ করছে; যার মধ্যে সেনাবাহিনী ও বিজিবির দশটি করে টিম রয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাইরে বের হতে পারবেন না। কেউ যদি নির্দেশনা অমান্য করেন, তার বিরুদ্ধে প্রয়োজন হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেনাবাহিনী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ তানভির আহম্মেদ বলেন, করোনা মহামারি মোকাবেলায় সেনাবাহিনী জনসচেতনাতায় মাঠে আছে। ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির নির্দেশনা মোতাবেক সেনাবাহিনীর কর্মতৎপরতা চলছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ের পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেনা, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব সদস্যরা একযোগে যশোরের রাস্তায় নামেন। তারা গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে টহল দেন।
ব্রিফিংকালে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. বেলাল আহম্মেদসহ জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।